Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

বৃষ্টিতে ক্ষতি আনাজের, বেড়েছে দাম

টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে আনাজ চাষ। সাধারণত পুজোর মুখেই জেলার বাজারগুলিতে শীতকালীন আনাজের আমদানি ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। শীতের কিছুটা আগেই আনাজ ফলিয়ে বাড়তি মুনাফাও করেন চাষিরা। তবে এ বার বৃষ্টি সেই সব চাষির বাড়া ভাতে যেন ছাই ফেলে দিয়েছে। 

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫৫
Share: Save:

পুজো মরসুমে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছে আনাজ চাষিদের। কপি, পটল থেকে ঝিঙে, উচ্ছে— প্রায় সব রকম আনাজই বৃষ্টির জলে নষ্ট হয়েছে বলে হাহুতাশ করছেন চাষিরা। যার আঁচ পড়েছে বাজারে। তাই লক্ষ্মীপুজোর আগে সবজির আগুন-দর দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে গৃহস্থেরও।
বর্ষায় বৃষ্টির ঘাটতিতে শুষ্ক মাটিতে মার খেল আমন চাষ। আর পুজোর আগে দফায় দফায় ঘূর্ণাবর্তের জেরে ডুবল মাঠ। পুজোর মধ্যেও বৃষ্টিতে লাগাম পড়েনি। বৃহস্পতিবারও বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে আনাজ চাষ।
সাধারণত পুজোর মুখেই জেলার বাজারগুলিতে শীতকালীন আনাজের আমদানি ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। শীতের কিছুটা আগেই আনাজ ফলিয়ে বাড়তি মুনাফাও করেন চাষিরা। তবে এ বার বৃষ্টি সেই সব চাষির বাড়া ভাতে যেন ছাই ফেলে দিয়েছে।

পাত্রসায়রের বালসির চাষি সব্যসাচী মোদক দেড় বিঘা জমিতে বেগুন, লঙ্কা, টোম্যাটো, ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছিলেন। তাঁর আক্ষেপ, “বেশ কয়েক হাজার টাকা খরচ করে চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে জলে ডুবে, কাদামাটিতে নুইয়ে পড়ে সব নষ্ট হয়ে গেল। বড় ক্ষতির মুখে পড়লাম।” একই ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়ির চাষি বামাপ্রসাদ দে। তাঁর দাবি, সাত বিঘা জমিতে তিনি বাঁধাকপি, ফুলকপি, লঙ্কা, শসা, লাউ ও করলার চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘করলা, লাউ, লঙ্কা বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধাকপি ও ফুলকপির ক্ষতি হয়েছে অর্ধেকের বেশি। এ বার মুনাফা করা দূরের কথা, যেটুকু কপি বেঁচে রয়েছে, তা বিক্রি করে চাষের খরচটুকু উঠবে কি না সন্দেহ রয়েছে।’’

এ দিকে, আনাজের ক্ষতিতে বাজারে আমদানি কমে গিয়ে দর বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। পুজোর আগে ফুলকপি যেখানে বাঁকুড়ার বাজারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে মিলছিল, বৃহস্পতিবার তার দাম উঠেছে প্রতি কেজিতে ৫৫-৬০ টাকা। পুজোর পরে কেজিতে অন্তত কুড়ি টাকা করে দর বেড়ে গিয়েছে বাঁধাকপি, করলা, পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, শসা, বেগুনের। একে তো মাসের মাঝামাঝি, তায় আবার হাতে গোনা কয়েক দিন পরেই লক্ষ্মীপুজো। এখনই আনাজের দর কমার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না আনাজ বিক্রেতারা।

বাঁকুড়ার বাসিন্দা পল্টু রক্ষিত বলেন, “পুজোতে হাতে থাকা টাকা-পয়সার অনেকটাই খরচ হয়ে গিয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর আগে এমনিতেই হাতটান অবস্থা। তার উপরে বাজারে আনাজের এই আকাশ-ছোঁয়া দাম! সব দিক দিয়েই মুশকিলে পড়ছি।’’ শহরের একটি আবাসনের বাসিন্দা স্বপ্না মজুমদার বলেন, “একেই পেঁয়াজ, আদা, পোস্তর দর সাধ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। এ বার আনাজের দামও বেড়ে গিয়েছে।’’

বাঁকুড়া জেলা কৃষি দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, জেলায় সার্বিক ভাবে আনাজ চাষের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তাদের হাতে আসেনি। বাঁকুড়ার উপকৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, “পুজোতে বৃষ্টির জন্য জেলায় আনাজ চাষে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে খবর আসছে। এ নিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ চলছে। তবে এই বৃষ্টিতে জেলার পুকুর ও জলাধারগুলিতে জল অনেকটাই বেড়েছে। আসন্ন রবি মরসুমে চাষের ক্ষেত্রে ওই জল কাজে লাগবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Rain Agriculture Vegetables
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy