আবাস যোজনার চেক দিলেন রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র
আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগে সরগরম রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। তার আঁচ লেগেছে রঘুনাথপুর শহরেও। এখানেও আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে পোস্টারও পড়েছিল কিছুদিন আগে। এ বার তাই বাড়তি সতর্কতা নিয়ে রঘুনাথপুর পুরসভা শিবির করে আবাস যোজনার উপভোক্তাদের হাতে চেক তুলে দিল। ‘সকলের জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে বৃহস্পতিবার ৪৮৬ জন উপভোক্তাকে চেক দেওয়া হয়েছে। অতীতে এই প্রকল্পে এ ভাবে শিবির করে চেক দেওয়া হয়নি পুরসভায়।
এ দিনের শিবির যে তাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশেই, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে বলে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিজেপি রঘুনাথপুরে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। তাই আমরা সবার সামনে পুরসভায় শিবির করে উপভোক্তাদের হাতে চেক তুলে দিয়েছি।” ভবেশের সংযোজন: পুরসভায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। তাতে উপভোক্তাদের ছবি উঠেছে। তাঁর দাবি, ওই ছবি দেখলেই বিজেপি নেতারা বুঝতে পারবেন, দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করা যোগ্য উপভোক্তারাই আবাস যোজনার সুবিধা পেয়েছেন।
‘কাটমানি’-বিতর্কে রঘুনাথপুরে বিক্ষোভ না হলেও আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে, কাটমানি নেওয়া হয়েছে— এমনই অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে বিজেপির নামাঙ্কিত পোস্টার পড়েছিল। বিজেপির দাবি, তারা পোস্টার দেয়নি।
তারপরেই আবাস যোজনায় শিবির করে উপভোক্তাদের চেক দিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে খণ্ডন করার চেষ্টা তৃণমূল শুরু করল বলেই মনে করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। দল সূত্রের খবর, লোকসভায় রঘুনাথপুরের সমস্ত ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়ার পরে বেশ কিছু কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। শিবির করে সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে আবাস যোজনার চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত মূলত তাঁরই। ভবেশ জানান, এ দিন আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের দ্বিতীয় কিস্তির চেক দেওয়া হয়েছে। পরের কিস্তির চেকও এ ভাবেই শিবির করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এতদিন কী ভাবে উপভোক্তাদের টাকা দেওয়া হত? পুরপ্রধানের দাবি, উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিস্তির টাকা সরাসরি পুরসভা পাঠিয়ে দিত। যান্ত্রিক সমস্যায় কারও অ্যাকাউন্টে টাকা না গেলে তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেক নিয়ে নিতেন। এ বার পুরপ্রধান সরাসরি চেক তুলে দেওয়ায় নিজেও উপভোক্তাদের চিনে রাখছেন। যদিও কাউন্সিলরদের একাংশ অবশ্য পুরপ্রধানের নিজের হাতে চেক বিলি ভাল ভাবে নিতে পারছেন না। তাঁরা দাবি করছেন, এলাকার লোকজনকে কাউন্সিলর সরকারি পরিষেবা দিলে তাতে তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা বাড়ে। ভোটের সময় তা কাজে লাগে।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, লোকসভা ভোটে শহরের সমস্ত ওয়ার্ডে হেরে গিয়ে তৃণমূল এখন নাটক শুরু করেছে। বিজেপির রঘুনাথপুর শহর মণ্ডলের সভাপতি স্বপ্নেশ দাসের অভিযোগ, ‘‘গত চার বছর ধরে আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের কাছ থেকে কাটমানি নিয়েই তৃণমূলের নেতা কাউন্সিলরদের আর্থিক বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এখন ঠেলায় পড়ে শিবির করার নাটক করছেন ওঁরা। বিভিন্ন প্রকল্পে কে কে কাটমানি নিয়েছেন, প্রশাসন তদন্ত করলেই তা স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy