প্রতীকী ছবি।
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রঘুনাথপুর ২ ব্লকে। ওই চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অভিযোগ তুলেছিলেন, বুধবার তিনি অফিসেরই কাজে পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে বিডিও-র এক কর্মী তাঁর অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। সে দিনই তিনি জেলা স্কুল পরিদর্শককে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান। বিষয়টি নজরে আসায় জেলাশাসক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের দরজার তালা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তালা খোলা হলেও, বিতর্ক বন্ধ হয়নি।
ওই ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে শিক্ষা দফতর ও প্রশাসনিক মহলে। শিক্ষকদের মধ্যেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা দফতরের কোনও আধিকারিককে তাঁর অফিসে না পাওয়ায় কিছু না বলে সরাসরি দরজায় তালা দেওয়ার এক্তিয়ার প্রশাসনের রয়েছে কি না, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অনেকে। পুরুলিয়া জেলারই কয়েকটি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দাবি করেছেন, ‘‘ওই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ থাকলে বিডিও তা জানাতে পারতেন জেলা শিক্ষা দফতরে। তা না করে তিনি কোনও ভাবেই অফিসে তালা দিতে পারেন না।’’
তবে অবর বিদ্যালয় অনুপস্থিত ছিলেন বলেই তাঁর অফিসে তিনি তালা দিয়েছিলেন, বিষয়টি আদৌ এমন নয় বলে পাল্টা দাবি করেছেন বিডিও ((রঘুনাথপুর) মৃন্ময় মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক তাঁর অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। অথচ তাঁক চেম্বার খোলা। সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকে। তাই সাবধানতার কারণেই এক কর্মীকে গিয়ে তালা বন্ধ করে দিতে বলেছিলাম।” বিডিও-র সংযোজন: ‘‘কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে ব্লক অফিসে প্রচুর লোকজন এসেছিলেন। কিন্তু অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে সেখানে দেখতে পাইনি। কন্যাশ্রী প্রকল্পটি সরাসরি শিক্ষা দফতরের। তাই খোঁজ নিয়েছিলাম তিনি কোথায় আছেন।” যদিও অনেকে বিষয়টি এত সরল বলে মানতে নারাজ।
কিছু দিন আগে বাঁকুড়া জেলার খাতড়ায় মহকুমা কৃষি আধিকারিকের অফিসে কর্মীদের হাজিরার জন্য ‘বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স’ চালু না হওয়ায়, এসডিও-র নির্দেশে সেই দফতরে তালা ঝোলানোর অভিযোগ ঘিরে বির্তক তৈরি হয়েছিল। পরে অবশ্য জেলাশাসকের নির্দেশে তালা খোলা হয়।
এখানে অবশ্য বুধবার ‘কন্যাশ্রী দিবস’-এর অনুষ্ঠানে রঘুনাথপুর ২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিশ্বজিৎ হেমব্রমকে দেখতে না পেয়ে বিডিও তাঁর খোঁজ নেন বলে সূত্রের খবর। তিনি অফিসে নেই শুনে ব্লকের এক কর্মীকে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের চেম্বারে তালা দিতে বলেন। অফিসের কর্মীদের কাছ থেকেই সেই খবর পান বিশ্বজিৎবাবু। তিনি যে সরকারি কাজেই পুরুলিয়ায় এসেছেন, সঙ্গে সঙ্গে তা লিখিত ভাবে জেলা স্কুল পরিদর্শককে (প্রাথমিক) জানিয়ে প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের আর্জিও জানান।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) অলক সামন্ত বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর ২ চক্রের এসআই বুধবার এক মৃত শিক্ষকের পেনশন সংক্রান্ত কাজে পুরুলিয়ায় জেলা শিক্ষা দফতরে এসেছিলেন। তাঁর অফিসে তালা দেওয়ার ঘটনাটি শোনার পরেই জেলাশাসককে জানিয়েছিলাম।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বিডিওকে তালা খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। শুক্রবার জেলাশাসক বলেন, ‘‘অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও বিডিও-র মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। দু’জনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।” শুক্রবার নিজের দফতরে বিশ্বজিৎবাবুকে ডেকে কথা বলেছেন জেলাশাসক।
কিন্তু কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে কেন অনুপস্থিত ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু? তাঁর দাবি, ‘‘আমার অফিসে তা তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কোনও কর্মী নেই। তাই মাঝে মধ্যেই দফতরের কাজে পুরুলিয়ায় যেতে হয়। সে দিন আমার অফিসে তালা দেওয়া নিয়ে যা ঘটেছে, সব ডিআইকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’ তবে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, দুই দফতরের মধ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের কাজ নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। যার জের গড়িয়েছিল বুধবার অফিসে তালা দেওয়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy