প্রতীকী ছবি।
গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের কাছে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি নতুন জলপ্রকল্পের প্রস্তাব রাজ্যের কাছে পাঠাল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।
সূত্রের দাবি, ওই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে কম-বেশি দু’শোরও বেশি গ্রামের বাসিন্দারা পরিস্রুত পানীয় জল পাবেন। পাশাপাশি, জেলার মোট ১৫৭টি স্কুলেও গভীর নলকূপ খোঁড়ার পৃথক একটি প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্পগুলির মোট আনুমানিক ব্যয় ৭৫ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কাছে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রকল্প রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘এই প্রকল্পগুলি অনুমোদন পেলে বহু মানুষকে পানীয় জল দেওয়া সম্ভব হবে।’’
জানা গিয়েছে, জেলার সেচ দফতরের অধীনে ৩২টি জলাধার রয়েছে। ছ’টি জলাধার জলপ্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। বাকিগুলির ক’টিতে গ্রীষ্মে জল থাকে, সেই তথ্যের ভিত্তিতে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, মোট ১৫টি জলাধারের জল পরিস্রুত করে তা গ্রামবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই সংক্রান্ত ১৫টি প্রকল্পের রিপোর্ট রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প রূপায়িত হলে দু’হাজারেরও বেশি গ্রামে পানীয় জল যাবে।
প্রত্যন্ত গ্রামে সরকারি পরিষেবার হাল সরেজমিনে দেখতে গ্রাম-সফর করেছিলেন জেলাশাসক। তিনি জানতে পারেন, বহু বিদ্যালয়ে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে, ১৫৭টি বিদ্যালয়ে গভীর নলকূপ খোঁড়ার একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, গত ৩১ ডিসেম্বর মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ ফোন করেছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে। জেলার ছোট-বড় জলাধার ও ঝোরাগুলিকে কী ভাবে পানীয় জলপ্রকল্পের কাজে লাগানো যায়, সে মর্মে দ্রুত রিপোর্ট চায় নবান্ন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২৯ ডিসেম্বর জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে পানীয় জল সরবরাহ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘জাপান ইন্টারন্যাশন্যাল কো-অপারেশন এজেন্সি’র (জ়াইকা) অর্থ সহায়তায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার একটি জল প্রকল্প হওয়ার কথা জেলায়। ২০১৩ সালে ওই প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল রাজ্য। যার প্রাথমিক পর্যায়ে পুরুলিয়া ১, পুঞ্চা, বরাবাজার, মানবাজার-১ এবং আড়শা ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কথা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পের দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি। বৈঠকে এই কথা শুনে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের প্রধান সচিবকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অর্থেও ক্ষুদ্র সেচের ব্যবস্থা ও জল সংরক্ষণে জোর দিতে বলেন তিনি।
বর্তমানে জেলার ২৮ শতাংশ মানুষ নলবাহিত জল পান। ‘জ়াইকা’র অর্থসাহায্যে ওই প্রকল্পটি গড়ে উঠলে আরও ২৮ শতাংশ মানুষ পানীয় জল পাবেন। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালে। তার আগের বছর বিধানসভা ভোট। প্রশাসন সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপে পরিষ্কার, ভোটের আগে ওই প্রকল্পকে ‘পাখির চোখ’ করছে রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy