সরেজমিন ডিএম। নিজস্ব চিত্র
নতুন ভোটারদের নাম তোলার ক্ষেত্রে তারা লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, সোমবার পর্যন্ত যেখানে ঘাটতি ছিল ৪০ শতাংশ, দু’দিনেই তা পূরণ করে নতুন ভোটার হতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ১১৬.৩ শতাংশ।
জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ভোটার তালিকার ওই কর্মসূচিতে সহায়তা চেয়ে আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে দু’টি বৈঠক করেছিলাম। এ ছাড়া, প্রতিদিন বেলা দু’টো থেকে চারটে পর্যন্ত বুথ লেভেল অফিসারেরা বুথে বসেছিলেন। প্রতি রবিবার বিশেষ শিবির করা হয়। সকলের সহায়তায় লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে।’’
ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন, সংশোধন ও বিয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বুথে-বুথে শিবির চলে। কিন্তু শেষ দিন, বুধবার মকর সংক্রান্তি হওয়ায় ঘাটতি পূরণ হবে কি না তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় তৈরি হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, জেলাশাসকের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে প্রশাসন তৎপরতা বাড়ানোয় ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি অনেক গতি পায়। সব মিলিয়ে নতুন ভোটারের সংখ্যা ৩২,৫৫২ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪,১৭৩। তবে জেলার বাকি আটটি বিধানসভা কেন্দ্র লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেলেও শুধু বান্দোয়ান কেন্দ্রেই তা ছোঁয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত নভেম্বরে ভোটার তালিকা ধরে যাচাই (ইলেক্টরাল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম) কর্মসূচির পরে, পুরুলিয়ার সমস্ত বুথেই নতুন ভোটারদের আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি কাদের বয়স ১৮ হচ্ছে তার আন্দাজ পেতে প্রতিটি এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে সম্ভাব্য নতুন ভোটার হিসেবে ৫৫,১৮০ জনকে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ঠিক করা হয়। সেই অনুযায়ী, নাম তোলার কাজ শুরু হয়।
ভোটারের নাম তোলায় ঘাটতি থাকায় কিছু দিন আগে সংশয় প্রকাশ করেছিল রাজনৈতিক দলগুলি। এ দিন তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘সবাই মিলে নামায় নতুন ভোটারদের নাম তোলার লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছে। এটা প্রশাসনের সদর্থক পদক্ষেপ।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর মতে, নতুন নাগরিকেরা এ বার বেশি সচেতন হওয়াতেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘শেষ দু’দিনের মধ্যে কী ভাবে এটা ঘটল, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী ব্লকভিত্তিক তালিকা প্রকাশের দাবি তুলেছেন।
লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেল কী ভাবে? জেলাশাসক জানাচ্ছেন, লক্ষ্যমাত্রার খসড়া তালিকা ঠিক করা হয়েছিল প্রাথমিক সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। তাঁর দাবি, তার মানে এই নয় যে, সবাইকে সমীক্ষার আওতায় আনা গিয়েছিল। এমনও রয়েছে ঠিকানা বদলের পরে, অনেকে নতুন জায়গায় নাম তুলিয়েছেন।
দু’দিনের মধ্যে ভোটারের সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়ল কী ভাবে? প্রশাসন সূত্রের দাবি, কিছু আবেদন জমা পড়লেও, পোর্টালে সে তথ্য ‘আপলোড’ করতে দেরি হওয়ায় সংখ্যা কিছু দিন আগে পর্যন্ত কম ছিল। শেষের দিকে সমস্ত আবেদন ‘আপলোড’ হওয়ায় সংখ্যা বেড়েছে।
এ ছাড়া, যাঁরা বাইরে কর্মরত, তাঁদের অনেকেই মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বাড়ি ফিরে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চেয়ে আবেদন করেছেন। সেই সঙ্গে স্কুলে স্কুলে যে ‘ইলেক্টোরাল ক্লাব’ রয়েছে, তাদেরও জেলাশাসকের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে পরিচিতদের ভোটার তালিকায় নাম তোলানোর জন্য প্রচারে নামিয়ে
সুফল মিলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy