E-Paper

তিন মাসে মৃত সাত, ঝুঁকির যাত্রা রাজ্য সড়কে

১১ মে দুর্ঘটনায় মৃত জহরলাল মুর্মু ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বিপিটিএ শিক্ষক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।

ব্যস্ত রাজ্য সড়কের পাশে এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। নিতুড়িয়ায়।

ব্যস্ত রাজ্য সড়কের পাশে এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। নিতুড়িয়ায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৯:৫০
Share
Save

তিন মাসে পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা সাত। ক্রমশই কি মরণ ফাঁদ হয়ে উঠছে নিতুড়িয়া থানা এলাকায় পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক? এই প্রশ্ন তুলে যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, প্রশাসনের কাছে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।

১০ এপ্রিল পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে বড়তোড়িয়া গ্রামে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক যুবকের। যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ হয়। ১১ মে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় জখম হন আট-দশ জন। মারা যান দুই পরিবারের পাঁচ জন। এক্ষেত্রেও একই দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ হয়। ৫ জুন ফের ওই রাস্তায় ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। ময়নাতদন্তের পরে দেহ সুভাষ সেতুর উপরে রেখে দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করা হয়। অভিযোগ, ওই ঘটনাগুলি বাদে আরও ছোটখাটো দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে নিতুড়িয়া থানা এলাকায় পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে।

১১ মে দুর্ঘটনায় মৃত জহরলাল মুর্মু ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বিপিটিএ শিক্ষক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। সংগঠনের আয়োজিত স্মরণসভাতেও যান নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছিল। সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য তিনকড়ি মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা প্রশাসনের কাছে যান নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছি।”

পুরুলিয়ার কয়লাখনি অঞ্চল নিতুড়িয়ায় শিল্প গড়ে ওঠার সঙ্গে বেড়েছে পণ্যবাহী যানবাহনের যাতায়াত। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে চালকের বদলে খালাসির হাতে মালবাহী গাড়ির স্টিয়ারিং থাকছে। তাঁদের অনেকের গাড়ি চালানোর যোগ্যতা নেই। চালকের লাইসেন্স যাচাইয়ে জোর দেওয়া হলে, এই প্রবণতা ঠেকানো সম্ভব। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড থেকে বহু গাড়ি যাতায়াত করছে নিতুড়িয়া শিল্পাঞ্চলে। সেগুলি আবার বেশ পুরনো বলেও অভিযোগ।

নিতুড়িয়ার এসইউসি নেতা নবনী চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কারখানাগুলির পাশে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকছে পণ্যবাহী গাড়ি। সেখানেই পণ্য ওঠানামা করানো হচ্ছে। এমন নানা কারণে এলাকায় পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলছে। অথচ ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ বোর্ড লাগিয়েই দায় সারছে পুলিশ। যথাযথ নজরদারি হচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রেই।”

দুর্ঘটনায় প্রিয়জনকে হারানো কি কষ্টের একমাত্র যাঁদের পরিবারে ঘটেছে, তাঁরাই তা বোঝেন— বলছেন ১১ মে পথ দুর্ঘটনায় স্ত্রী মৃদুলা মণ্ডলকে হারানো সড়বড়ির বাসিন্দা গণেশ মণ্ডল। ওই রাতে সড়বড়ি মোড় থেকে নিতুড়িয়া থানা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তায় সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই ধাক্কা মেরেছিল ওই ট্রাক। গণেশের প্রশ্ন, ‘‘ওই ট্রাক চালক কি মত্ত অবস্থায় ছিল না? সেটা ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়েছে কি?”

চালকেরা কী অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছেন, তা যাচাইয়ে পুলিশের আরও জোর দেওয়া দরকার বলে দাবি করছেন নিতুড়িয়াবাসী। পাশাপাশি, গাড়িগুলি রাস্তায় চলাচলের যোগ্য কি না সেটাও খতিয়ে দেখুক পরিবহণ দফতর। বিশেষ করে মোড় এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণে আরও কড়া পদক্ষেপ করুক পুলিশ। তাঁদের আশঙ্কা, সম্প্রসারিত হচ্ছে রাজ্য সড়ক। ফলে এখন থেকেই সর্তকতামূলক ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে আরও অনেকের প্রাণ যাবে।

তবে তাঁরা পদক্ষেপ করছেন বলে জানাচ্ছেন রঘুনাথপুরের এসডিও তামিলওভিয়া এস। তিনি বলেন, ‘‘পথ দুর্ঘটনার কারণগুলি খতিয়ে দেখে সমাধানে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে। পুলিশ, ব্লক প্রশাসন থেকে পূর্ত দফতর ও পরিবহণ দফতরেরআধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হবে।দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা হবে। চিহ্নিত করা হবে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলি। তারপরেই যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।