খাতড়া ১ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে অবরোধ।। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (প্লাস) তালিকায় দুঃস্থদের বঞ্চনার অভিযোগে শুক্রবারও বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ অব্যাহত থাকল। এ দিন খাতড়া, তালড্যাংরার পাঁচমুড়া ও হিড়বাঁধে বিক্ষোভ চলে।
নাম না থাকায় নতুন করে সমীক্ষা করার দাবিতে খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলে। পাশাপাশি, খাতড়া ১ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে খাতড়া-সিমলাপাল রাস্তাও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। খাতড়া ১ পঞ্চায়েতের অধীন প্রায় এক কিলোমিটার ব্যবধানে একই দাবিতে পৃথক দু’টি বিক্ষোভকে ঘিরে এ দিন এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে যান এসডিপিও (খাতড়া) কাশীনাথ মিস্ত্রি, বিডিও (খাতড়া) অভীক বিশ্বাস, আইসি (খাতড়া) সমিত ভট্টাচার্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা। ব্লক প্রশাসনের তরফে অন্দোলনকারীদের দাবি সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে জানানো পরে বিক্ষোভ ওঠে। তারপরে তাঁরা খাতড়া ১ পঞ্চায়েতে গিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরে অবরোধ ওঠে। পুলিশের দাবি, অল্প সময়ের জন্য অবরোধ ছিল। যানবাহন চলাচলে কোনওসমস্যা হয়নি।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাঁরা আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ যাঁদের স্বচ্ছল পরিবার, তাঁদের নাম রয়েছে তালিকায়। অনেকের পাকা বাড়ি আছে, কেউ আবার আগেও বাড়ি পেয়েছেন। অথচ যাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, তাঁদের নাম নেই তালিকায়।
পঞ্চায়েত সমিতির সামনে বিক্ষোভকারী পূর্ণিমা বাগদি, পদ্মা বাউরি, পুটকুনি বাউরি, ময়না দুলেরা দাবি করেন, ‘‘শুধু প্রকৃত গরিবেরাই যাতে ঘর পান, সে জন্য পুনরায় সমীক্ষা করার দাবি জানানো হয়েছে।’’
একই কথা বলেন খাতড়া ১ পঞ্চায়েতের সামনে অন্দোলনকারী যমুনা রুইদাস, রীতা মণ্ডল, টগর বাউরি, আরতি বাউরিরাও। একই দাবিতে এ দিন খাতড়ার বিডিও এবং আইসি-র কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় ‘আদিবাসী একতা মঞ্চ’-র খাতড়া ব্লক কমিটি।
তালিকায় নাম না থাকায় নতুন করে সমীক্ষার দাবিতে তালড্যাংরার পাঁচমুড়া পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেন স্থানীয়েরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আধকড়া গ্রামের নিমাই কালিন্দীর দাবি, ‘‘বাড়ি পাওয়ার যোগ্য হলেও তালিকায় আমার নাম নেই! নতুন করে সমীক্ষার দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ বিক্ষোভকারীদের একাংশের দাবি, আগের সমীক্ষার তালিকায় অনেক যোগ্যের নাম ছিল। কিন্তু সম্প্রতি যে তালিকা ঘুরছে, তাতে যোগ্যদের নাম নেই। পাঁচমুড়া পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের তরুণ কুম্ভকার বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’
প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম সংযুক্ত করার দাবিতে এ দিন বিজেপির সিমলাপাল ২ মণ্ডল সিমলাপাল ব্লকের লক্ষ্মীসাগর পঞ্চায়েতে এবং হিড়বাঁধ মণ্ডলের তরফে হিড়বাঁধের বিডিওকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির হিড়বাঁধ মণ্ডলের সভাপতি অতনু হালদারের দাবি, ‘‘এলাকার বহু গরিবের নাম বাদ দিয়ে অবস্থাপন্নদের তালিকায় ঠাঁই দেওয়া হয়েছে।’’
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গরিবদের ঘরের জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও তাঁদের আত্মীয়দের নাম তালিকায় রয়েছে। গরিবেরা ঘর পাচ্ছে না। এর ফলে জনরোষ তৈরি হচ্ছে।’’ সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অজিত পতি-ও দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল এতদিন যে দুর্নীতি করেছে, সবাই তা জেনে যাওয়ায় প্রতিকার চাইতে নেমেছেন।’’
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র দাবি করেন, ‘‘আবাস প্লাসের উপভোক্তা তালিকা করে প্রশাসন। তবুও বিরোধীরা রাজনীতি করার জন্যই এসব ভ্রান্ত অভিযোগ তুলছেন।’’
এসডিও (খাতড়া) মৈত্রী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনে অযোগ্যদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কাজ চলছে। বাকি বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy