বিক্ষোভে তৃণমূল নেতা। নিজস্ব চিত্র
জমিদাতাদের বিক্ষোভে ব্যাহত হল সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন। বিক্ষোভকারীদের হাতে কারখানার দুই কর্মীরও নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার নিতুড়িয়ার দীঘা পঞ্চায়েতে ‘জঙ্গলসুন্দরী’ কর্মনগরীতে থাকা ওই কারখানায় বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে জেলা পরিষদের এক বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ তথা এলাকার তৃণমূল নেতা নির্মল রাউতকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে রাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বিভিন্ন সংস্থাকে বিনিয়োগে আহ্বান জানাচ্ছেন, সেখানে তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতে ঘণ্টা দুয়েক কারখানার গেট আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে। দলের যাঁরা ঘটনায় জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে নেতৃত্বকে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন নিতুড়িয়ার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি হরেরাম সিংহ।
ওই কর্মনগরীতে প্রায় সত্তর একর জমিতে বড় মাপের সিমেন্ট কারখানা গড়ে উঠেছে। কারখানা গড়তে সরাসরি মালিকদের কাছ থেকে জমি কেনে সংস্থা। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ কারখানার মূল গেট আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন জমিদাতারা। তাঁদের দাবি, জমি কেনার সময়ে কারখানায় কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছিল সংস্থা। উৎপাদন শুরু হলেও এখনও অনেকের কর্মসংস্থান হয়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি নয়, অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
কারখানা কর্তৃপক্ষের আরও অভিযোগ, বিক্ষোভের জেরে মূল গেট আটকে যাওয়ায় কারখানায় ঢুকতে পারেননি কর্মীরা। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। পাশাপাশি, বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু লোকজন সীমানা প্রাচীর টপকে কারখানার ভেতরে ঢুকে প্যাকিং বিভাগের দুই কর্মীকে মারধর করে। স্থানীয় হারমাড্ডি গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা হয়েছে। কারখানার পার্সোনেল বিভাগের প্রধান সুমনকল্যাণ রায়ের দাবি, ”কারখানার কর্মীদের ৮৮ শতাংশই স্থানীয় লোক। এলাকায় দক্ষ কর্মী না থাকায় বাইরে থেকে কিছু কর্মী আনা হয়েছে। তবে কারখানার অন্য কাজে স্থানীয়দেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।”
এই ঘটনাকে তবে দলীয় কর্মসূচি বলতে নারাজ তৃণমূল নেতা নির্মল। কর্মসংস্থান না হওয়ায় জমিদাতাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষোভে দলের কোনও পতাকা ছিল না। যাঁরা শামিল হয়েছিলেন, সকলে তৃণমূল করেনও না।” নির্মলের দাবি, তিনি নিজেও চার একর জমি বিক্রি করেন কারখানা গড়তে। এলাকায় শিল্পায়নের স্বার্থে সে সময়ে অন্যদের বুঝিয়ে কম দাম পেলেও জমি বিক্রি করিয়েছেন। এখন কর্মসংস্থান না হওয়ায় তাঁর উপরে তাঁরা চাপ তৈরি করছেন। নির্মলের কথায়, ‘‘জমির মালিকদের কর্মসংস্থানের জন্য অন্তত বার দশেক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কথা দিয়েও কথা রাখেননি তাঁরা। বাধ্য হয়েই পথে নামতে হয়েছে।”
তবে দাবি আদায়ে এই পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়, দাবি তৃণমূলের শ্রমিক নেতা হরেরামের। তিনি বলেন, “ব্লকে আরও অনেক কারখানা আছে। সেখানেও কর্মসংস্থান-সহ নানা দাবি রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি বজায় রাখতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। কোথাও গেট আটকে বিক্ষোভ হয়নি।”
দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাতে কোনও রকম ব্যাঘাত দল বরদাস্ত করবে না। দলের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত থাকলে খতিয়ে দেখে
কড়া পদক্ষেপ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy