E-Paper

বরাদ্দের ঘোষণা নেই, চিন্তায় প্রাথমিকের শিক্ষকেরা

বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, শিক্ষাখাতের অর্থ অন্যত্র খরচ করায় কম্পোজ়িট গ্রান্টের অর্থ দিতে পারছে না রাজ্য।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৫:২৩
Share
Save

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলির জন্য ‘কম্পোজ়িট গ্রান্ট’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। কিন্তু প্রাথমিকের জন্য কোনও ঘোষণা না হওয়ায় আতান্তরে দু’জেলার প্রাথমিক স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। বিশেষ করে যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি, সমস্যা বাড়ছে বলে দাবি শিক্ষক মহলের।

পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের গগনাবাইদ প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্ধার্থ পাল জানান, স্কুলে বিদ্যুতের বিল আসে দেড় হাজারের বেশি। বিল না মেটালে সংযোগ ছিন্ন হতে পারে। সেই আশঙ্কায় শিক্ষকেরা নিজেরা বিল মেটাচ্ছেন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপার খরচও বহন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়ুয়াদের কাছ থেকে কিছু টাকা ‘ফি’ নেওয়া হয়। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পুরোই অবৈতনিক। আমরা কী ভাবে স্কুল চালাব!”

ঘটনা হল, ‘কম্পোজ়িট গ্রান্ট’-এর বরাদ্দে চক-ডাস্টার কেনা থেকে প্রায় সমস্ত খরচই চলে। শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই খাতে কোনও টাকা মেলেনি। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “চক-ডাস্টার কেনা থেকে সাফাইয়ের খরচ, সবই ধারে করতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও নিজেদের টাকা দিতে হচ্ছে।” সোনামুখীর একটি প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রী দাস লাহাও জানান, ইলেকট্রিক বিল, পরীক্ষার খরচ চালাতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। জেলার বড় অংশের শিক্ষকদেরই অভিযোগ, একটি শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চলল। স্কুলের নানা মেরামতের কাজ বাকি। এ ভাবে আর কত দিন টানা সম্ভব! স্কুলগুলিতে ছাত্র-সংখ্যার অনুপাতে ওই খাতে অর্থ বরাদ্দ হয়। তাই যে সব স্কুলে পড়ুয়া বেশি, সেখানে সমস্যা বেশি হচ্ছে বলে দাবি স্কুলগুলির।

তবে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, শিক্ষাখাতের অর্থ অন্যত্র খরচ করায় কম্পোজ়িট গ্রান্টের অর্থ দিতে পারছে না রাজ্য। সিপিএমের দুই শিক্ষক সংগঠন, এবিটিএ ও এবিপিটিএ-র নেতা যথাক্রমে ব্যোমকেশ দাস, নিলয় মুখোপাধ্যায়দের কটাক্ষ, “রাজ্য দাবি করছে, কেন্দ্র ষাট শতাংশ টাকা দেয়নি বলে তারা টাকা দিতে পারছে না। নিজেদের ভাগের চল্লিশ শতাংশ অর্থ দিয়ে তবেই রাজ্যের এই দাবি করা উচিত।” তাঁদের আরও অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগ না করে স্কুলে শিক্ষক-সঙ্কট তৈরি করে এবং স্কুল পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না করে আসলে শিক্ষার বেসরকারিকরণের চক্রান্ত করছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার।

অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের পুরুলিয়ার সভাপতি জ্যোতির্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “কম্পোজ়িট গ্রান্ট নিয়ে অন্য শিক্ষক সংগঠনের দাবি যথাযথ নয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে সচেতন। মন্ত্রী থেকে শিক্ষা দফতর, সর্বত্র কম্পোজ়িট গ্রান্টের টাকা দেওয়ার আবেদন জানানোর পরেই টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার।” তবে টাকা হাতে না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারছেন না শিক্ষকেরা। ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’-এর পুরুলিয়ার সম্পাদক অভিষেক মিশ্র বলেন, “কম্পোজ়িট গ্রান্টের টাকায় স্কুল পরিচালনার সব কাজ চলে। সেই টাকা হাতে না পেলে স্কুল পরিচালনাই কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে।” পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজীবলোচন সরেন বলেন, “এই বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Primary School teacher bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।