Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

হড়পা বানে ফাঁসলেন দু’জন, বাঁচাল পুলিশ

এ দিন দুপুরে বলরামপুর, আড়শা থানা এলাকার তিন ছাত্র ও দুই ছাত্রী বামনি ঝোরায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁরা ঝোরার পাশের পাথর বেয়ে কিছুটা নীচে নামেন। সেই সময় হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামে।

লড়াই: পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের বামনিঝোরায় আটকে পড়া কলেজ পড়ুয়াদের উদ্ধার করা হচ্ছে। (ডান দিকে) উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে দু’জন। নিজস্ব চিত্র

লড়াই: পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের বামনিঝোরায় আটকে পড়া কলেজ পড়ুয়াদের উদ্ধার করা হচ্ছে। (ডান দিকে) উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে দু’জন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

ফের হড়পা বান পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে। তবে তাতে আটকে পড়েও, পুলিশের চেষ্টায় রক্ষা পেলেন দুই কলেজ পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঘমুণ্ডির বামনি ঝোরার ওই কাণ্ড অনেকেরই মনে পড়িয়ে দিয়েছে তেরো বছর আগে বাঘমুণ্ডিরই ডাউরি খালের ঘটনা। সে বার হড়পা বানের মুখে পড়েন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রছাত্রী। দুই ছাত্র উদ্ধার হলেও, খাল থেকে পরে মিলেছিল দুই ছাত্রী ও এক ছাত্রের দেহ।

এ দিন দুপুরে বলরামপুর, আড়শা থানা এলাকার তিন ছাত্র ও দুই ছাত্রী বামনি ঝোরায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁরা ঝোরার পাশের পাথর বেয়ে কিছুটা নীচে নামেন। সেই সময় হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামে। প্রথমে একটু-একটু করে, পরে খুব দ্রুত বাড়তে থাকে ঝোরার জল। দুই ছাত্র ও এক ছাত্রী নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পারলেও, আটকে পড়েন এক ছাত্র ও এক ছাত্রী। অন্তত ১০০ ফুট উঁচু ঝোরা থেকে তখন তোড়ে পড়ছে ঘোলা জল। প্রাণে বাঁচতে ওই দু’জন কোনও রকমে একটি পাথরের উপরে উঠে পড়েন। সাহায্য চেয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন তাঁদের সঙ্গীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে গেলেও ঝোরার ভয়ঙ্কর চেহারা দেখে বিশেষ সাহস পাননি। উদ্বেগে-উৎকণ্ঠায় এবং জলে ভিজে এক রকম নেতিয়ে পড়েন ওই দুই তরুণ-তরুণী।

খবর পেয়ে বাঘমুণ্ডি থানার ওসি রজত চৌধুরী দলবল নিয়ে সেখানে পৌঁছন। পুলিশকর্মীরা চিৎকার করে, হাত নেড়ে ওই দু’জনকে আশ্বস্ত করেন। খরস্রোতা ঝোরার উপরে দড়ি বেঁধে নেওয়া হয় উদ্ধারের পরিকল্পনা। উদ্ধারকারীদের অন্যতম পুলিশকর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী ও নাজিমুল হুদা বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ গাছা মোটা দড়ি ঝোরার পারের গাছে-পাথরে বেঁধে ওঁদের দিকে ছুড়ে দিই। ওঁরা দু’জন যে পাথরের উপরে ছিলেন, কপাল ভাল তার পাশে একটা বড় গাছ ছিল। ওঁরা দু’জনে সেই গাছে শক্ত করে দড়ি বাঁধেন। তার পরে দড়ি বেয়ে, পাথরে পা ফেলে আমরা কয়েকজন এগিয়ে যাই।’’ প্রথমে ছাত্রীটিকে সরানো হয়, তার পরে উদ্ধার করা হয় ছাত্রটিকে। পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে বাড়িতে খবর পাঠায়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘খুব ঝুঁকি নিয়ে ওই দুই ছাত্রছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বর্ষার সময়টুকু ছাড়া, বামনি ঝোরায় সামান্যই জল থাকে। তবে বর্ষায় অযোধ্যা পাহাড়ে যখনতখন হড়পা বানের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই সময়ে ওই এলাকায় ঝোরা বা খালে নামার আগে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন ওই ঘটনার আগে ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি হয়েছে। তাতেই আচমকা ফুঁসে উঠেছিল বামনি ঝোরা। ভাগ্যিস, আগের বারের মতো কিছু হয়নি!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE