‘চক্রে’ আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ফাইল চিত্র।
চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল সুভাষ মাহাতো, মানিক মাহাতো, অনিলচন্দ্র মাহাতো ও কৃষ্ণপদ টুডু। সুভাষ সাঁওতালডিহি ও অনিল পুরুলিয়ার জয়পুর থানার বড়টাঁড় গ্রামের বাসিন্দা। অন্য দু’জনের বাড়ি বরাবাজারে। বৃহস্পতিবার শহরের দেশবন্ধু রোড এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। শুক্রবার আদালতে তোলা হলে সুভাষ ও মানিককে সাত দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, এ পর্যন্ত কম-বেশি ৪৫ লক্ষ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছে ‘চক্রটি’। পুরুলিয়ার পাশাপাশি, লাগোয়া বাঁকুড়া ও ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকাতেও চক্রের এজেন্টরা সক্রিয় ছিল। যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন চক্রের ‘মাথা’, বাকিরা এজেন্ট হিসেবে কাজ করত বলে অনুমান পুলিশের।
পুলিশ সূত্রের দাবি, পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোডে রীতি মতো অফিস খুলে ‘প্রতারণা’র ফাঁদ পেতেছিল ‘চক্রটি’। তবে অফিসে কোনও সাইনবোর্ড ছিল না। কাগজে কাজের বিজ্ঞাপন দিয়ে ‘টোপ’ দেওয়া হত। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে দিন কয়েক আগে ‘কর্মখালি’ শিরোনামে সরকারি স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষক, পিওন ইত্যাদি পদে নিয়োগের জন্য ‘বায়োডেটা’ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ-সহ যোগাযোগের একটি বিজ্ঞাপন পুলিশের নজরে আসে। সে বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে চার জনের নাগাল মেলে, দাবি পুলিশের।
পুরুলিয়া সদর থানা সূত্রের দাবি, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ‘টোপ’ দিয়ে টাকা তুলতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ‘এজেন্ট’ রেখেছিল ‘চক্রটি’। ওই ‘এজেন্ট’রা বেকার তরুণ-তরুণীদের পুরুলিয়া শহরের অফিসে নিয়ে আসত। সেখানে তাঁদের কোন কোন পদে চাকরি খালি রয়েছে, তা জানানো হত। বিভিন্ন কাজের ‘জাল’ বিজ্ঞাপন দেখিয়ে দফায় দফায় তাঁদের কাছ থেকে অর্থ দাবি করা হত, দাবি পুলিশের।
পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “কোনও চাকরির ক্ষেত্রে যোগ্যতা হয়তো স্নাতক। অথচ, দেখানো হত, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেই আবেদন করা যাবে। সুপারিশ শুরু করতে প্রথমে কয়েক হাজার টাকা দিতে হত। প্রার্থীকে এমনও বোঝানো হত, শূন্য পদের চেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। তাই তাঁর নিয়োগের জন্য আলাদা ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের টোপে বেশির ভাগ প্রার্থীই বেশি টাকা দিতে রাজি হয়ে যেত। এজেন্টরা যেমন ‘শিকার’ নিয়ে আসত, সে অনুযায়ী কমিশন পেত।”
তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, ‘চক্রটি’ বছর দু’-তিনেক আগেও সক্রিয় ছিল। সে বারেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় চক্রের ‘মাথারা’ গা ঢাকা দেয়। পরিস্থিতি শান্ত হতে ফের কাজের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। ‘চক্রে’ আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy