জয়দেব মেলার তোরণে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
অজয় নদের তীরে বাউল-ফকিরের গান, আখড়ায়-আখড়ায় কোলাহল, পুণ্যার্থীদের থিকথিকে ভিড়— সব মিলিয়ে আবারও চেনা ছন্দে শুরু হল জয়দেব-কেঁদুলির মেলা। রবিবার বিকেলে নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পরে প্রদীপ জ্বালিয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ, জেলাশাসক বিধান রায়-সহ অনেকে। মেলার চেনা ছবির বাইরে মেলামুখী মানুষের চোখ আটকে গেল একাধিক তোরণে। বহু দিন পরে তোরণে দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলের ছবি।
দলীয় সভা-সমাবেশের কাট্আউট, ফেস্টুন থেকে আগেই বাদ গিয়েছিল জেলবন্দি অনুব্রতের নাম ও ছবি। কয়েক মাস আগেও নানুরে দলীয় কার্যালয়ে মুছে ফেলা হয়েছিল তাঁর নাম। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা জেলা জুড়ে। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এ বার ঐতিহ্যবাহী জয়দেব কেঁদুলির মেলার তোরণেই দেখা গেল তাঁর অসংখ্য ছবি। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা বলে এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা।
যদিও অনুব্রত অনুগামীদের দাবি, দলীয় কর্মসূচি বা অনুষ্ঠানে অনুব্রতের ছবি থাকার রীতি ছিল জেলায়। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাঁকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়, এই তোরণগুলিতে তাঁর ছবি প্রমাণ করছে। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ যেন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা চলছে। ওদের মূল সম্বল দুর্নীতি, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ জয়দেব মেলাতে দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা অনুব্রত মণ্ডলের ছবি টাঙানো।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘তাঁর অনুগামীরা অনুব্রতকে সামনে রেখেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইছেন।’’
অনুব্রতের তিহাড় যাত্রা নিশ্চিত হতেই জেলা তৃণমূলের একাংশের কাছে গুরুত্ব কমতে থাকে তাঁর। বর্তমানে দলের জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর নামের জায়গায় ‘কোর কমিটি টু কমিটি’ লেখা হয়েছে। জয়দেব মেলার উদ্বোধনের দিন ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির তরফে মেলায় ঢোকার রাস্তা এবং মেলা জুড়ে যে তোরণগুলি নির্মাণ করা হয়েছে, তাতে অনুব্রত মণ্ডলের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং ইলামবাজারের ব্লক সভাপতির ছবি দেওয়া হয়েছে। আর তা নিয়েই নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার বিষয় নয়, যাঁরা মনে করবেন অনুব্রত অন্তরে আছেন তাঁরা ছবি লাগাতেই পারেন এই ব্যাপারে দলের কোনও নির্দেশ নেই।’’
অজয়ে প্রতি বার যে ভাবে মকর স্নান হয়ে এসেছে, সে ভাবে এ বারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই মেলার মূল আকর্ষণ হল বাউল-ফকিরের গান। ৬৫০টির বেশি বিভিন্ন স্টল বসার পাশাপাশি অস্থায়ী আখড়াও বসেছে প্রায় আড়াইশোটি। প্রথম দিনই ভিড় উপচে পড়েছে মেলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy