Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্যান্ডেল ছেড়ে ঝোঁক বাড়ছে মন্দিরে পুজোয়

মহম্মদবাজার ব্লকে সংগঠন ক্লাব, স্পোর্টিং ক্লাব, কাঁইজুলি ফ্রেন্ডস ক্লাব ও কুলিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো— এই চারটি সবথেকে বড় পুজো। প্রতি বছর এই চার জায়গায় তুলে ধরা হয় বিভিন্ন থিম।

তৈরি হয়েছে মন্দির। নিজস্ব চিত্র

তৈরি হয়েছে মন্দির। নিজস্ব চিত্র

পাপাই বাগদি
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৫
Share: Save:

একবার করে নিলেই হল। ফি-বছর প্যান্ডেল তৈরির ঝক্কি নেই, পুজোর বাজেট কিংবা বৃষ্টি নিয়ে তেমন ভাবনা নেই। বছরের অন্য সময়ে অন্য পুজো করার ক্ষেত্রও মস্ত সুবিধে। এমনই নানা কারণে গত কয়েক বছরে জেলায় ঝোঁক বাড়ছে প্যান্ডেলের পুজো ছেড়ে মন্দিরের পুজোয়। মহম্মদবাজার সহ জেলার নানা প্রান্তে প্রবণতার ইঙ্গিত সে দিকেই।

মহম্মদবাজার ব্লকে সংগঠন ক্লাব, স্পোর্টিং ক্লাব, কাঁইজুলি ফ্রেন্ডস ক্লাব ও কুলিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো— এই চারটি সবথেকে বড় পুজো। প্রতি বছর এই চার জায়গায় তুলে ধরা হয় বিভিন্ন থিম। পুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। ভিড় জমান বহু মানুষ। এর মাঝে তিন বছর আগেই সংগঠন ক্লাব মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করেছে। এই বছর কাঁইজুলি ফ্রেন্ডস ক্লাবের পক্ষ থেকেও বানানো হয়েছে মন্দির। বর্তমানে মহম্মদবাজারে প্যান্ডেল করেছে স্পোর্টিং ও কুলিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। পাশাপাশি এই দুই ক্লাব শুরু করেছে মন্দিরের কাজও। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বছর দু’য়েকের মধ্যেই মন্দিরে পুজো শুরু হবে।

মন্দিরের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সংগঠন ক্লাবের সম্পাদক দেবরঞ্জন রায় ও ফ্রেন্ডস ক্লাবের সম্পাদক বুবাই সরকার জানালেন, দিন দিন খরচ যে ভাবে বেড়ে চলেছে তাতে আর সে ভাবে প্যান্ডেলের কাজ করতে পারা যাচ্ছে না। প্যান্ডেলের খরচ প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। তার পরেও থাকছে প্রতিমা, লাইট সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা খরচ। দেবরঞ্জন, বুবাইদের কথায়, ‘‘দু’বছর ধরে পুজোর আগে যে ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে প্যান্ডেলের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল। মন্দিরে পুজো করলে প্যান্ডেল করার চিন্তা থাকে না। টাকাও কম খরচ হচ্ছে। সেই টাকায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করা যাচ্ছে।’’

স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদক দেবব্রত সাহা ও কুলিয়া সর্বজনীন দুর্গা উৎসব কমিটির সম্পাদক কানাইলাল ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘বৃষ্টির জন্য প্যান্ডেলের কাজ এখনও শেষ করা যায়নি। এ ভাবে বৃষ্টি পড়লে পুজোর মুখে কাজ শেষ হবে। একবার মন্দির বানাতে পারলে এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি। তাই আমরাও মন্দিরের কাজ শুরু করেছি। বছর দু’য়েকের মধ্যে মন্দিরে পুজো শুরু করব।’’ মন্দিরে পুজোর পক্ষে আরও যুক্তি দিয়েছেন তাঁরা। কথা বলে জানা গেল, এখন চাঁদা তুলতে যাওয়ার লোক কম বলে সে ভাবে টাকা উঠছে না। মন্দিরে পুজো হলে টাকা কম উঠলেও তা সামাল দেওয়া যাবে।

দুবরাজপুরে এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে আগেই। এলাকার বড় পুজোগুলোর অন্যতম ইয়ুথ কর্নার ক্লাবের স্থায়ী মন্দির হয়েছে বছর চারেক আগে। আরও একটি বড় পুজো সংহতি ক্লাব কয়েক বছর আগে স্থায়ী মন্দির করেছে। পোদ্দারবাঁধের একটি পুজোর উদ্যোক্তারাও এই পথে হেঁটেছেন। তা ছাড়া দুবরাজপুরের বড় পুজোগুলির ক্ষেত্রে মন্দির রয়েছে। বোলপুরেও জোড়াসাঁকো ক্লাব এক বছর আগে স্থায়ী মন্দির করে পুজো শুরু করেছে। রামপুরহাটেও মন্দিরে পুজোর চল শুরু হয়েছে। শহরের চাঁদমারি আবাসিক পুজো কমিটির সদস্য মিলন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘প্রায় ১৫ বছর ধরে পুজো করছি। শুরুতে প্যান্ডেলের জন্য ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হত। সেখান থেকে টাকা বাঁচিয়ে স্থায়ী মন্দির তৈরি করেছি।’’ একই ঝোঁক রয়েছে গ্রামেও। নলহাটির কুরুম গ্রামের বাসিন্দা সুজল মণ্ডলের কথায়, ‘‘পুজোর খরচা বাঁচিয়ে চাঁদা তুলে আমরাও মন্দির তৈরি করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Temple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy