প্রতীক্ষা: মঙ্গলবার সকাল থেকে বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ সময় মানুষজনকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। দু’একটি বাস স্ট্যান্ড থেকে বেরোলেও যাত্রী তোলেনি বলে দাবি। ছবি: শুভ্র মিত্র
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় যাওয়ার জন্য রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল কমবেশি ৪০০ বেসরকারি বাস। মঙ্গলবার পথে বেরিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। যে বাসগুলি চলেছে, সেগুলিতেও ছিল বাদুড়ঝোলা ভিড়। কেউ ধরতে পেরেছেন ঘাম ঝরিয়ে। কেউ পারেননি।
মঙ্গলবার সকালেই বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কার্যত তৃণমূল কর্মীদের দখলে চলে যায়। সকালে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, হাজির পুলিশকর্মীরা। সাধারণ যাত্রীদের কারও কারও দাবি, তাঁদের সমস্যার কথা বলতে গেলে মুখ ঘুরিয়ে নেন উর্দিধারীরা। যাত্রী ভোগান্তির কথা স্বীকার করে নিলেও তাকে ‘স্বাভাবিক’ বলেই মনে করছেন বাস মালিক কল্যাণ সমিতির বাঁকুড়া জেলার সহসভাপতি অঞ্জন মিত্র। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তায় খুব কম বাস চলছে। স্বাভাবিক কারণেই যাত্রীদের অসুবিধে হতে পারে।”
বিষ্ণুপুর থেকে মেদিনীপুর, আরামবাগ, সোনামুখী এবং বাঁকুড়া যাওয়ার জন্য হাতে গোনা দু’য়েকটি সরকারি বাস চোখে পড়েছে। সেগুলিতেও ছিল ঠাসা ভিড়। বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকুড়া বা দুর্গাপুর যাওয়ার বেসরকারি বাস ছিল হাতে গোনা কয়েকটি। আর দুর্গাপুর, সোনামুখী ও বর্ধমান যাওয়ার বেসরকারি বাস কার্যত ছিলই না।
বাঁকুড়া-খাতড়া রুটেও মোটের উপর চিত্রটা ছিল একই রকম। হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি বাস চলেছে ওই রুটে। বাসগুলিতে মাছি গলার জায়গা ছিল না। এ দিন ইঁদপুরের বাংলা বাজারে চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন জ্বরে আক্রান্ত গোবিন্দপুরের শোভা বাউরি। বাড়ি ফেরার জন্য দীর্ঘক্ষণ নামো বাংলা স্টপে অপেক্ষা করেও বাস পাননি। ছোট গাড়ির পিছনে কোনওক্রমে পা রাখার জায়গা পান। ঘাড় ঘুরিয়ে বলেন, ‘‘প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা এই ভাবেই যেতে হবে।’’ অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘চারশোর বেশি বেসরকারি বাস তোলা হয়েছে। তবে যেখানে সমস্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়, সেই সব এলাকা থেকে কম বাস তোলা হয়েছে। বিষ্ণুপুর থেকে বাস ৪৩টি বাস তোলা হয়েছে। জয়পুর থেকে তোলা হয়েছে চারটি।’’
ইন্দাসের বাজিতপুর থেকে বিষ্ণুপুর আদালতে এসেছিলেন রণজিৎ মিদ্যা। ফিরে যাওয়ার বাস না পেয়ে শেষে ছোট গাড়ি ভাড়া করতে যান। গাড়িচালক দর হাঁকেন ১ হাজার ২০০ টাকা। অত টাকা রণজিতবাবুর কাছে ছিল না। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে বাস পেয়েছিলেন।
কোতুলপুরে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য বিষ্ণুপুর বাস স্টপেজে এসেছিলেন রণজিৎ নন্দী। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরে বলেন, “ভেবেছিলাম দুয়েকটা বাস নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু এখন শুনছি সব বাসই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় চলে গিয়েছে।”
খাতড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিন বেসরকারি কোনও বাসই যাত্রী পরিবহণ করেনি। যাত্রীদের সম্বল বলতে ছিল কয়েকটি সরকারি বাস বা ট্রেকার। খাতড়া, রানিবাঁধ, হিড়বাঁধ, ইঁদপুর, রাইপুর, সিমলাপাল, সারেঙ্গা সহ খাতড়া মহকুমার কোনও রুটেই এ দিন একটি বেসরকারি বাসও চলেনি। সবক’টি বাসই ভাড়া করে নিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা।
খাতড়া বাসস্ট্যান্ড কমিটির সম্পাদক নিতাই দত্ত জানান, খাতড়া বাসস্ট্যান্ড ছুঁয়ে বাঁকুড়া, দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান, বিষ্ণুপুর, রানিবাঁধ, ঝিলিমিলি বান্দোয়ান, টাটা, রাইপুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে ১৪০ টির মতো বেসরকারি বাস। বেলা ১০ টা নাগাদ খাতড়ার পাম্প মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন মনোজ মাহাতো নামে এক যাত্রী। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও বাস না পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘রানিবাঁধে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলাম। মানবাজারে বাড়ি যাব বলে সকালে বেরিয়েছি। কোনও
বাস পাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy