প্রতীকী ছবি।
‘হিট অ্যান্ড রান’-এ প্রাণ গেল পথচলতি এক যুবকের। সোমবার রাতে সিউড়ি পুর এলাকার রবীন্দ্রপল্লির ডিএসএ মার্কেটের কাছে ওই পথ দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ওই গাড়ির চালক অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চালানোর কারণেই ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা করার অভিযোগ তুলেছেন প্রত্যক্ষদর্শী দুই যুবক।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম আরসাদ আয়ুব (২৮)। তিনি সিউড়ির সাজানোপল্লির বাসিন্দা। তিনি কর্মসূত্রে কুয়েতে থাকতেন। মাস চারেক আগে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। মৃতের বাবার সিউরি কোর্ট বাজারে একটি দোকান আছে। রাত ১০টা ১৫ নাগাদ আরসাদ রবীন্দ্রপল্লির ডিএসএ মার্কেটের সামনের রাস্তার ফুটপাত ধরে দোকানে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁকে একটি গাড়ি পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে এবং তিনি ছিটকে গিয়ে সামনের একটি দেওয়ালে আছড়ে পড়েন।
সেই সময় ডিএসএ মার্কেটের কাছে ছিলেন শেখ শিলন এবং চন্দন গড়াই নামে দুই যুবক। তাঁরা সেখানে ছুটে এলে দেখেন আরসাদ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন ও স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তাঁকে জল দিচ্ছে। এরপরেই চন্দন ও শিলন ওই গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যায়। কিন্তু গাড়িটির অত্যাধিক গতির কারণে তাঁরা গাড়িটিকে ধরতে ব্যর্থ হন। চন্দন ও শিলনের অভিযোগ, সেই সময় সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি পুলিশের গাড়ি ছিল। কিন্তু সেখানে কর্মরত পুলিশদের ঘটনার কথা বলা হলে তাঁরা তাঁদের সহায়তা করেন না বলে অভিযোগ।
শিলন ও চন্দনের কথায়, ‘‘ওই গাড়ির চালক প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল। আমাদের মনে হয় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল। আমরা বাস স্ট্যাণ্ড এবং সংশোধনাগারের বিপরীতে থাকা দুটি পুলিশের গাড়ির কাছে গিয়ে ঘটনার কথা বলি। কিন্তু আমাদের থানায় খবর দেওয়ার জন্য বলা হয়।’’ প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার প্রায় ২০ মিনিট পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ও আরসাদকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘটে করেন। পুলিশ তৎপর হলে ঘাতক গাড়িটিকে আটকানো যেত বা আরসাদকে প্রাণেও বাঁচানো যেতে পারত বলে মৃতের পরিজনের দাবি।
ছেলের মৃত্যু সংবাদ পেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন আরসাদের মা রুখসানা বেগম। তাঁকেও সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মৃতের আত্মীয় মহম্মদ সাজিদ বলেন, ‘‘আরসাদ তো রাস্তার ফুটপাত ধরে হাঁটছিল। সেই সময় একটি গাড়ি এসে ওঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। আমরা চাই দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হোক।’’ মঙ্গলবার সকালেও মৃতের পরিবার পরিজনরা থানায় এসে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ওই রাস্তাটি নতুন করে তৈরি হওয়ার পর থেকেই প্রচুর গাড়ি মাত্রাতিরিক্ত গতিতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। এর আগেও বেশ কয়েকবার ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই সময়ও পুলিশকে বলা হয়েছিল কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। তাঁদের দাবি, দ্রুত ওই এলাকায় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। না হলে আগামী দিনে আবারও দুর্ঘটনা ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, “সেফ ড্রাই সেভ লাইফ নিয়ে প্রচুর কর্মসূচি হচ্ছে। কীভাবে ওই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy