Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
প্রশাসনে আর্জি পিডিসিএলের
PDCL

বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা দিতে চাই রেলপথ

পিডিসিএলের বক্তব্য,  রেলপথ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে প্রশাসনিক। অনুমতি না পেলে কয়লা উত্তোলনই বন্ধ করে দিতে হবে। তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে।

ফাটল: ভারী যান চলাচলে ফাটল খয়রাশোলের এই সেতুতে। ফাইল চিত্র

ফাটল: ভারী যান চলাচলে ফাটল খয়রাশোলের এই সেতুতে। ফাইল চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০৮
Share: Save:

রাস্তা বেহাল হয়েছিল আগেই। কিছু দিন আগে সেতুও বসে যাওয়ায় ভারী যানচলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পৌঁছতে দীর্ঘদিন দিন ধরে অব্যবহৃত রেলপথ ব্যবহার করতে চায় রাজ্য বিদ্যুৎ উন্ন।ন নিগম বা পিডিসিএল। খয়রাশোলের দু’টি খোলামুখ কয়লাখনি থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পৌঁছতে বীরভূম জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদনও করেছে পিডিসিএল। তবে, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় এবং আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা থাকায় এখনও এই আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়নি বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। বিষয়টি বিবেচনাধীন।

পিডিসিএলের বক্তব্য, রেলপথ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে প্রশাসনিক। অনুমতি না পেলে কয়লা উত্তোলনই বন্ধ করে দিতে হবে। তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে। খয়রাশোলের সেতু সংস্কার সম্পন্ন হলেও ভবিষ্যতের জন্য কয়লা বহন জনিত সমস্যা জিইয়েই থাকবে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের আগে একটি বেসরকারি সংস্থা খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর-বড়জোড় এবং গঙ্গারামচক নামক দু’টি খোলামুখ কয়লাখনির দায়িত্বে ছিল। তখন ভীমগড়-পলাস্থলী বন্ধ থাকা রেলপথের মধ্যে থাকা একটি অংশ কয়লা বহনের জন্য ব্যবহৃত হত।

হজরতপুর সাইডিং থেকে কয়লা মালগাড়িতে লোড হত। কিন্তু, লাগাতর কয়লা চুরি ও নানা শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার জন্য প্রচুর সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করতে হত। তার পরেও সমস্যা পুরোপুরি মেটানো যায়নি।

২০১৫ সালে কোল ব্লক ওই বেসরকারি সংস্থার হাত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পিডিসিএল-কে। তখন থেকে ভারী ডাম্পারের সাহায্যে উত্তোলিত কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছনো শুরু হয়।

সমস্যা তাতেও মেটেনি। প্রতিদিন শয়ে শয়ে কয়লা বোঝাই ভারী যানবাহন যাতায়াতে রাস্তার অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে রানিগঞ্জ –মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের পাঁচড়া থেকে খয়রাশোল পর্যন্ত অংশের হাল সবচেয়ে খারাপ হয়। বাধ্য হয়ে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায় পিডিসিএল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে পূর্ত (সড়ক) দফতর। অস্থায়ী সংস্কার হলেও রাস্তা এখনও একই রকম খারাপ বলে দাবি স্থানীয় মানুষের। এরই মধ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর খয়রাশোল থেকে বাবুইজোড় যাওয়ার পথে নওপাড়ার আগে একটি কাঁদরের উপরে থাকা সেতু বসে যায়। ফলে গোটা ব্লকের কার্যত চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। বালির বস্তা , ইউক্যালিপটাসের খুঁটি দিয়ে হাল্কা ও ছোট গাড়ি পারাপারের ব্যবস্থা হলেও কয়লা বা বালি বহন আপাতত পুরোপুরি বন্ধ। নতুন সেতু হবে, এমন সম্ভাবনাও নেই। ফলে কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছনোই এখন বিরাট সমস্যার।

পিডিসিএলের এক আধিকারিক বলছেন, রাস্তা খারাপ বা সেতু বসে যাওয়ার পাশপাশি একটি বড় সমস্যা রয়েছে ঘিঞ্জি দুবরাজপুর শহরকে ঘিরেও। কারণ জাতীয় সড়ক ওই শহরের মাঝ বরাবর গেলেও দিনের বেলায় ভারী ট্রাক ও ডাম্পার চলাচলের অনুমতি দেয় না স্থানীয় প্রশাসন। অপক্ষো করতে হয় রাতের জন্য। বিকল্প পথে দুর্গাপুর হয়ে ফের বক্রেশ্বরে পাঠানো হচ্ছিল কয়লা। সেটা খরচ সাপেক্ষ। তাই রেলপথ ব্যবহার করতে চাইছে পিডিসিএল। প্রশাসনের অনুমতি যদিও মেলেনি।

স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের একটা অংশের ক্ষোভ, রাস্তা খারাপ হয়ে গেলে সেটা সংস্কারে উদ্যোগী হয় না পিডিসিএল। ফেব্রুয়ারিতে কয়লাবোঝাই ভারী যান চলাচালে পুরোপুরি খারাপ হয়ে গিয়েছিল নওপাড়া গ্রামের রাস্তা। সেই রাস্তার কাজে এখনও হাত দেয়নি পিডিসিএল। অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি পিডিসিএল।

অন্য বিষয়গুলি:

PDCL Rail tracks Coal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE