ডেউচা-পাঁচামির চাঁদা মৌজার এই জমি থেকেই প্রথম কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। বুধবার চলছে জমির মাপার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি গড়ার পথে আরও এক পা। সব কিছু ঠিক থাকলে, প্রথম ধাপে মহম্মদবাজার ব্লকের যে অংশে কাজ শুরু করার কথা, সেখানকার আনুমানিক ৪৩০ একর জমি থেকে কয়লা উত্তোলন হবে বলে ঠিক করছে এই খনি গড়ার নোডাল সংস্থা রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল)।
এখানেই শেষ নয়, ওই কয়লা ভান্ডারের উপরে কালোপাথরের (ব্ল্যাকস্টোন) মজুত ভান্ডার রয়েছে। সেটা তুলে ফেলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার জন্য পিডিসিএল আন্তর্জাতিক দরপত্র চাইবে বলেই বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে, সংশ্লিষ্ট এলাকার জমিদাতাদের চাকরি-সহ পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়ার পরে দরপত্র চাওয়া হবে। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘এটুকু বলতে পারি, প্রথম পর্যায়ে কয়লা উত্তোলনের জন্য ৪৩০ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে। যা কিছু হবে, তা এলাকার মানুষ ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই হবে।’’
মহম্মদবাজারের পাঁচামি-দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা কোল ব্লকে কোথায়, কত কয়লা, কী অবস্থায় আছে, মাটির কত নীচে আছে, তা জানতে সমীক্ষা গত বছর সমীক্ষা করে সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিংঅ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট লিমিটেড (সিএমপিডিআইএল)। চূড়ান্ত সমীক্ষার পাশাপাশি কী উপায়ে কয়লা তোলা উচিত, তার পরিকল্পনা ও নকশা তৈরির কাজও করে কোল ইন্ডিয়ার শাখা সংস্থা সিএমপিডিআইএল। নিয়ম সমীক্ষা অনুযায়ী সিএমপিডিআইএল-এর তৈরি করা নকশা সংসদের খনি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। স্থায়ী কমিটি সমীক্ষা ভিত্তিক রিপোর্ট এবং নকশা অনুমোদন করলে কয়লা উত্তোলনের দরপত্র ডাকার কথা। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সিএমপিডিআইএল ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছে। এর পরেই আন্তর্জাতিক দরপত্র নিয়ে ভাবনা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দু’টি পর্যায়ে সাড়ে তিন হাজার একর জমিতে গড়ে ওঠার কথা ডেউচা-পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লা খনি প্রকল্প। খনি গড়ার পথে সবচেয়ে জরুরি ছিল এলাকায় বসবাসকারী মানুষের আস্থা অর্জন। এত বড় এলাকা জুড়ে প্রস্তাবিত খনি এলাকায় বসবাসকারী প্রকৃত জমির মালিক, বর্গাদার, পাট্টাদার ও ভূমিহীনদের চিহ্নিত করাও কঠিন কাজ ছিল। পাশাপাশি ছিল জমির রেকর্ড ঠিক করা। প্রথম দিকে, বাধা থাকলেও সরকারি পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা এবং প্রশাসনের লাগাতার পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই অনেক জমিদাতা সরকারকে জমি দিয়েছেন। চাকরিও পেয়েছেন প্রায় এক হাজার জন।
তবে এখনও কিছু প্রশ্নের উত্তর প্রশাসন সূত্রে স্পষ্ট করা হয়নি। যেমন, যে অংশ কয়লা উত্তোলনের জন্য চিহ্নিত হয়েছে, সেখান থেকে কী ভাবে কয়লা তোলা হবে, সেটা খোলামুখ হবে না কি অন্য কিছু, তা জানা যায়নি। কবে থেকে কাজ শুরু হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। যে জমি চিহ্নিত হয়েছে তার মধ্যে সরকারি খাসজমি ও বেসরকারি মালিকানাধীন জমির পরিমাণ কতটা, জানা যায়নি। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ওই জমির একটি অংশ সরকারি। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি মালিকদের বড় অংশই সরকারকে কয়লা খনির গড়ার জন্য জমি দিতে সম্মত হয়েছেন বলে প্রশাসনের দাবি। বাকি অংশের জমির প্রকৃত মালিক ও জমির রেকর্ড ঠিক করার কাজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy