পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এমডি পি বি সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।
খনি গড়ার আগে ডেউচা-পাঁচামির দেওয়ানগঞ্জ, হরিণশিঙা কোল ব্লকে কোথায়, কত পরিমাণ কয়লা কী অবস্থায় আছে, মাটির কত নীচে আছে, তার খুঁটিনাটি তথ্যভিত্তিক সমীক্ষা চালানো জরুরি। শুক্রবার পর্যালোচনা বৈঠকে এসে সেই সমীক্ষা দ্রুততার সঙ্গে করানোর পরামর্শ দিয়ে গেলেন পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) এমডি পি বি সেলিম। জেলা প্রশাসন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। সিউড়ি শহর ঘেঁষা পিডিসিএলের আবদারপুর অতিথি নিবাসে এ দিন সকালে হওয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
কী নিয়ে অলোচনা হল এই বিষয়ে মুখ খুলতে চান নি রাজ্য প্রশাসনের ওই কর্তা। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘ডেউচা-পাঁচামি নিয়ে আমরা কতটা এগোতে পেরেছি, আগামী দিনে কোথায় কী ভাবে কাজ এগোবে, সে বিষয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে, যা প্রতি মাসেই হয়ে থাকে।’’ তবে একগুচ্ছ পরামর্শের মধ্যে প্রস্তাবিত খনি এলাকায় ‘ড্রিল’ বা ‘বোর হোল’ করানোর বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, ডেউচায় কয়লা খনি গড়ার নোডাল এজেন্সি পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হয়ে খুঁটিনাটি তথ্যভিত্তিক ওই সমীক্ষা চালানোর দায়িত্বে রয়েছে সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট (সিএমপিডিআই)। প্রকৃত চিত্র পেতে প্রস্তাবিত এলাকায় মোট ৭৯টি জায়গায় ড্রিল বা বোর হোল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোথায় কোথায় সেগুলি করা হবে তার নকশাও তৈরি করেছে সিএমপিডিআই। প্রতিটি বোর হোল হবে ২০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে। প্রশাসনের এক সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই সমীক্ষা থেকেই জানা যাবে, মাটির কত নীচে কয়লা, কয়লা তোলার পদ্ধতি কী হবে।
তবে, এই কাজে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকায় খনি-বিরোধী আন্দোলন। এলাকার মানুষের আস্থা পুরোপুরি অর্জন না-করে খোঁড়াখুঁড়ি করতে গেলে ফের সমস্যা না হয়, সেই চিন্তাও প্রশাসনের রয়েছে। কারণ গত মাসে সরকার ঘোষিত ক্ষতিপূরণের চেক ও চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গিয়েছিল এই খনি-বিরোধী আন্দোলনের জেরেই। আবার এটাও ঠিক, বিরোধিতার পাশাপাশি এলাকার একটা অংশের মানুষ কয়লা খনির পক্ষে। ইতিমধ্যেই ১২০ জন তাঁদের জমি সরকারকে বিক্রি করেছেন। জমি দিতে রাজি হয়েছেন এমন সংখ্যা ৩০০০ ছাড়িয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের । ফলে ধীরে হলেও কাজ এগোচ্ছে।
তবুও মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করতে যাওয়ার আগে প্রশাসন সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ করতে চাইছে বলে সূত্রের খবর। কারণ, দেওয়ানগঞ্জ ও হরিণশিঙা, যেখান থেকে খনির কাজ প্রথম ধাপে শুরু হওয়ার কথা, সেখানেই ১৬টি জায়গায় ড্রিল বা বোর হোল করতে হবে। তার আগে আস্থা অর্জনের অঙ্গ হিসেবে এলাকার বেশ কিছু লোকজনকে এক লপ্তে চাকরি দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে প্রশাসনের।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy