দোকানে জটলা। নিজস্ব চিত্র
বোমা, গুলি চলার পরে থমথমে অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা মোড়। বুধবারও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও লোকজনের চলাচল বেড়েছে। দোকানপাটেও আগের মতো চেনা ভিড় দেখা গিয়েছে।
তা দেখে স্বস্তিতে বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, রাজনৈতিক গোলমালের ইতিহাস ১০ বছর আগেই আমরা দেখেছি। আর সেই অশান্তির দিন ফেরত চাই না। রাজনীতির জন্য জনজীবন যেন আর বিপর্যস্ত না হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার উপরে তাদের নজর রয়েছে। কাঁকরডাঙা মোড়ে এ দিন পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
শনিবার রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর পাত্রসায়রে মিছিলের পরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাঁকরডাঙা মোড়। জনতা-পুলিশের সংঘাতে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। গ্রেফতার হয় বিজেপি নেতা তমালকান্তি গুঁই। গুলিবিদ্ধ হন এক স্কুল ছাত্র ও দুই বিজেপি কর্মী। তারপর থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা। রবিবার দোকানপাট খোলা থাকলেও মানুষজন ছিল একেবারেই হাতে-গোনা। পাছে কোনও গোলমালে জড়িয়ে পড়েন, এই ভয়ে অনেকে কাঁকরডাঙা মোড়ের দিকে পা বাড়াননি।
মঙ্গলবার বিজেপি নেতা মুকুল রায় ঘুরে যাওয়ার পরে ফের তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বলরামপুর এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে কাঁকরডাঙায় অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। ফের অশান্তির মেঘ জমতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। তবে, এ দিন সকাল থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।
দোকানে-দোকানে মানুষের জটলা, পথে ছাত্রছাত্রীদের চলাচল দেখা যায়। রাস্তার ধারের তেলেভাজার দোকানে, আখের রসের ঠেলাগাড়ির সামনে চেনা খদ্দেরদের আনাগোনা ছিল। স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ী চন্দ্রদেব কুণ্ডু বলেন, ‘‘শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকুক আমরা সব সময় চাই। পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে দেখে স্বস্তি পাচ্ছি। ক’টা দিন কী ভাবে যে কাটল।’’
২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে রাজ্যে বামফ্রন্ট কিছুটা কোণঠাসা হতেই পাত্রসায়রে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মীদের হানাহানি প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে উঠেছিল। টানা দু’বছর অশান্তির মধ্যে পার হয় পাত্রসায়রবাসীর। এ বারও লোকসভা ভোটের ফলের পরে বিক্ষিপ্ত ভাবে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের গোলমালের পরে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে।
এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কৃষ্ণচন্দ্র কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা ছোট খাটো ব্যবসা করে খাই। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কখন কী হয়, এই আতঙ্কে দোকান খুলতে ভরসা পাই না। তার উপরে খদ্দেরও কমে যায়। তাই সব সময়েই চাই, আর যেন অশান্তি না হয়। সবাই মিলেমিশে থাকুক।’’
এখনও বাঁকুড়া মেডিক্যালে সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছে কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সৌমেন বাউড়ি। গুলি তার পেট ফুঁড়ে যাওয়ায় শরীরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় স্বস্তির মধ্যেই সৌমেনকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে কাঁকরডাঙা। ঘরের ছেলে কবে ঘরে ফিরবে, সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy