Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বিস্ফোরণে অভিযুক্ত সদস্য ধৃত

চলতি বছরের ২৪ অগস্ট মজুত বোমার বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল বড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির একাংশ। তৃণমূল এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করলেও পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন বাড়ির মালিক মহিবুলই।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১৭
Share: Save:

ঘটনার প্রায় দু’মাস পরে নাটকীয় ভাবে ধরা পড়লেন বিস্ফোরণে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মহিবুল। কাঁকরতলা থানা এলাকার অন্য একটি খুনের মামলায় হাজিরা দিতে এসে শনিবার বিকেলে দুবরাজপুর আদালতের বাইরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন মহিবুল।

চলতি বছরের ২৪ অগস্ট মজুত বোমার বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল বড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির একাংশ। তৃণমূল এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করলেও পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন বাড়ির মালিক মহিবুলই। শনিবার পুলিশের হাতে ধরা পরার আগে পলাতক ছিলেন তিনি।

তবে আদালত চত্বরের মধ্যে, নাকি চত্বরের বাইরে মহিবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। আদালতে উপস্থিত হতে হয় কাঁকরতলা থানার ওসি জহিদুল ইসলামকে। সে পর্ব মিটিয়ে মহিবুলকে গ্রেফতার দেখায় কাঁকরতলা থানা। রবিবার সকালে ধৃতকে ফের দুবরাজপুর আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে পায় পুলিশ। মামলার সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে বলেন, ‘‘পুলিশ ধৃতকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল। বিচারক দু’দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচিত ওই তৃণমূল সদস্যের বাড়িতে বোমা মজুত রয়েছে খবর পেয়েই অগস্টের ২৪ তারিখ ওই গ্রামে গিয়েছিল পুলিশ। বাড়ি ঘিরে যখন বোমা

উদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, ঠিক তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। উড়ে যায় বাড়ির একাংশ। কেউ হতাহত না হলেও ক্ষয়ক্ষতি ভালই ছিল। শুধু বোমা মজুত নয়, শেখ মহিবুলের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক দিন আগে অন্য একটি মামলায় জামিন পেয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন তিনি। তার পরেই বিস্ফোরণ। পুলিশ জানিয়েছে, বছর দুই আগে শেখ খিলাফত খুনে অন্যতম অভিযুক্তও ছিলেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। মামলার বিচার-পর্ব চলছে। আদালতে হাজিরা দিতে এসেই শনিবার পুলিশের নাগালে পড়ে যান মহিবুল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাতক থাকা অবস্থায় ওই মামলায় এর আগেও দু’বার আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন ওই সদস্য। আসা-যাওয়ার পথে নজরদারি থাকলেও দু’বার ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্রের কথায়, আদালতের বাইরে কোথাও লুকিয়ে থেকে ঠিক সময়ে আদালতে উপস্থিত হয়ে গ্রেফতারি এড়ানোর ‘চালাকি’ করে পার পেয়ে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। শনিবার সেটা হয়নি। দুবরাজপুর আদালতে উপস্থিত হওয়ার আগে পিছনের দিকে একটি কালী মন্দিরে বসেছিলেন মহিবুল। ঠিক তখনই দুবরাজপুর থানার সহযোগিতায় তাঁকে ধরে কাঁকরতলা থানা।

দ্রুত খবর ছড়ায় আদালত চত্বকে পুলিশ তাঁকে ধরেছে। কী করে আদালতের মধ্যে অভিযুক্তকে ধরা হল, এই নিয়ে বিতর্ক ওঠে। বিতর্ক তুলেছিলেন আইজীবীদের একাংশই। বিষয়টি গড়ায় বিচারক পর্যন্ত। তিনি ওসি কাঁকরতলাকে ডেকে পাঠান। মামলার সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে মানছেন, ‘‘এমন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে অভিযুক্তকে আদালত চত্বরে নয়। ধরা হয়েছে বাইরে থেকে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়ার পরেই ধৃতকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন বিচারক।’’

এই নিয়ে কোনও কথা বলেননি ধৃত পঞ্চয়েত সদস্য। রবিবার আদালত চত্বরে নিয়ে-আসা ও নিয়ে-যাওয়া পুরো পর্বে চুপ ছিলেন মহিবুল। চোখ ঢেকে রেখেছিলেন কালো চশমায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Dubrajpur Blast Case Panchayet Member
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy