Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC

তৃণমূলের সহায়তা শিবির নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীদের

মঙ্গলবার থেকে জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে সহায়তা শিবির খোলা হয়েছে। সেখানেই জবকার্ড, আধার কার্ড দিয়ে নাম নথিবদ্ধ বা ‘রেজিস্ট্রেশন’ করানোর ভিড় বাড়ছে।

TMC

তৃণমূলের ১০০ দিনের কাজের সহায়তা কেন্দ্র। মঙ্গলবার মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৩
Share: Save:

১০০ দিনের বকেয়া মজুরি পেতে তৃণমূলের সহায়তা শিবির নাম নথিবদ্ধ করার কাজ চলছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি হয়ে যাওয়া কাজকে ফের ‘নতুন’ করে করার জন্য মানুষকে শিবিরে ডেকে আনার যুক্তি কী, সেটি নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে। অন্য দিকে, বিরোধীদের কটাক্ষ, এই সহায়তা শিবির আদতে ভোটের প্রচার ছাড়া কিছু নয়।

শাসকদল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সহায়তা শিবির চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অন্য জেলায় রবিবার থেকে এই সহায়তা শিবির শুরু হলেও, সে দিন যেহেতু জেলায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি ছিল, তাই বীরভূমে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সহায়তা শিবির খোলা যায়নি। সোমবার, ১৯ ফেবব্রুয়ারি, বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে সহায়তা শিবির শুরু হয়েছিল।

মঙ্গলবার থেকে জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে সহায়তা শিবির খোলা হয়েছে। সেখানেই জবকার্ড, আধার কার্ড দিয়ে নাম নথিবদ্ধ বা ‘রেজিস্ট্রেশন’ করানোর ভিড় বাড়ছে। যাঁরা দু’বছর আগে ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা পাননি তাঁরা তো আছেনই, নাম লিখিয়ে আবেদনপত্র জমা দিলেই ১০০ দিনের প্রকল্পে অর্থ পাওয়া যাবে ভেবে বহু জবকার্ডধারীও ভিড় করছেন। জানা গিয়েছে, আবেদনপত্র জেলা হয়ে কলকাতা পাঠানো হবে। বিভ্রান্তি সেখানেই।

কেন্দ্র বকেয়া না মেটালে রাজ্যের ২১ লক্ষ জবকার্ডধারী প্রাপ্য রাজ্য সরকার মেটাবে, মুখ্যমন্ত্রীর এ ঘোষণার পরেই জেলা জুড়ে তৎপরতা শুরু হয়েছিল। গোটা প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা’ বজায় রাখতে জেলা প্রশাসনকে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাই করতে বলা হয়েছিল। জেলা জুড়ে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার’ দেখে ‘ড্রাফ্ট ওয়েজ পেমেন্ট লিস্ট’ (মজুরি মেটানো সংক্রান্ত খসড়া তালিকা) অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি যাচাই করা হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন জেনেছে, ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার জবকার্ডধারী ১৩৮ কোটি টাকা বকেয়া। প্রশাসনিক ভাবেই সেই টাকা দেওয়ার কথা। তা হলে ফের শাসকদলের সহায়তা শিবিরের প্রয়োজন কোথায়, প্রশ্ন উঠেছে।

রবিবার সিউড়ির প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই সহায়তা শিবিরের যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজ যাঁরা করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে মজুরি পাননি, আমার গরিব ভাই-বোনেরা, যেহেতু সংখ্যাটা আমার নজরে এসেছে ২১ লক্ষ থেকে বেড়ে ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার। তাই আপনারা ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে দরকারে আপনারা নাম লেখাবেন। যাতে কেউ বাদ না যান।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘যখনই মুখ্যমন্ত্রী বকেয়া টাকা মেটানোর কথা বলেন, তখনই বোঝা গিয়েছিল উদ্দেশ্য। যখন আপনি প্রশাসনকে দায়িত্বে দেবেন (সেটা ঠিক বা ভুল পরে বিচার্য) সেই তথ্য অনুযায়ী উপভোক্তারা কে, কত পাবেন ঠিক হবে। এটা হলে নির্বাচনের আগে আমি তোমাকে পাইয়ে দিলাম, সেটা প্রচার করা যায় না। সে জন্যই দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাতে দলের লোকদের দিয়ে ভোটটা করিয়ে নেওয়া যায়।’’

প্রায় একই দাবি বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি বাবন দাসের। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্য যে কোনও সরকারি প্রকল্প আর শাসকদলের কোনও ফারাক থাকে। সমান্তরাল ভাবে সেটা চলে। দল ভাবে আমি সরকার আর সরকার ভাবে আমি দল। সেটাই ঘটছে। রবিবার সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা তো রাজনৈতিক সভায় রূপান্তরিত হয়েছিল।’’

জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিরোধীরা যা ইচ্ছে বলতেই পারে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমরা মানুষের পাশে থাকি। যাতে কেউ বঞ্চিত না থাকেন, সেটা দেখতে দিদি নির্দেশ দিয়েছেন ।সহায়তা কেন্দ্র থেকে তাঁদের সহায়তা করা হচ্ছে।’’ তবে জেলা তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের একাংশ আড়ালে বলছেন, ‘‘কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে গরিব মানুষদের টাকা ফেরাচ্ছেন দিদি। সেটা তো মানুষকে জানানো প্রয়োজন। সেটাই হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC siuri West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy