রঘুনাথপুর হাসপাতালে কর্মবিরতি। নিজস্ব চিত্র
অস্থায়ী কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় শনিবারও সমস্যা একই রয়ে গেল বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। অন্য দিকে, এ দিন জেলার আরও দু’টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল— ওন্দা ও ছাতনাতেও কর্মবিরতি করে আন্দোলনের পথে নামলেন অস্থায়ী কর্মীরা। যার ফলে পুজোর মুখে এই হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা ব্যাহত হতে শুরু করেছে। একই অভিযোগে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ১০৫ জন ঠিকা কর্মী এ দিন সকাল ৯টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি পালন করেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নিরাপত্তা রক্ষী, ওয়ার্ড বয়, হাউস কিপাররা।
ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে ঠিক সময়ে বেতন না দেওয়া, নিয়ম মেনে পুজোর বোনাস ও চুক্তিপত্রের নবীকরণ না করা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শুক্রবার থেকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করেন। এর ফলে, হাসপাতালের সাফাই বন্ধ হয়ে পড়েছে। চারপাশে ডাঁই হয়ে জমে রয়েছে দু’দিনের আবর্জনা। তার ফলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী থেকে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা সকলেই দুর্গন্ধে নাজেহাল হচ্ছেন।
এ দিন বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে ইতিউতি পড়ে রয়েছে আবর্জনা। ওয়ার্ডগুলিতে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, পলিথিন, কাগজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। ডাস্টবিন উপচে আবর্জনা নীচে পড়ছে। দুর্গন্ধে শ্বাস নেওয়া দায় হচ্ছে ওয়ার্ডের ভিতরে ও শৌচালয়ের সামনে। এমনকি, সুপার স্পেশালিটির ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটেও বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত রায় বলেন, “ঠিকা কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় সাফাই কার্যত বন্ধ রয়েছে দু’দিন ধরে। রোগী পরিষেবার ক্ষেত্রেও কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।”
এ দিকে একই অভিযোগ তুলে এ দিন ওন্দা ও ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিকাকর্মীরাও কর্মবিরতি শুরু করায় সেখানেও পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিকাকর্মী দেবু গড়াই, সুব্রত নিয়োগী দাবি করেন, “২০১৮ সালে নতুন ঠিকা সংস্থা কাজের দায়িত্ব পায়। তার পরেই আমাদের বেতন বেশ খানিকটা কমে গিয়েছে। পুজোর বোনাস নিয়ম মেনে দেওয়া হয়নি। হঠাৎ করে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কাটার পরিমাণও বাড়িয়ে দেওয়া হল। চুক্তিপত্র নবীকরণও করা হয়নি।” একই অভিযোগ তুলছেন ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিকাকর্মীরাও।
ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, “ঠিকাকর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালে। সমস্যার কথা স্বাস্থ্যভবনে জানিয়েছি।” এ দিন বারবার চেষ্টা করেও ওই ঠিকা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি এসএমএস-এরও।
এ দিকে পুজোর মুখে হাসপাতালগুলিতে এ ভাবে কাজ ব্যাহত হওয়ায় চিন্তায় স্বাস্থ্য দফতর। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলেন, “সমস্যা মেটাতে মাসখানেক আগেই ওই ঠিকাসংস্থা ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু তার পরেও দেখছি সমস্যা চলছে। পুজোর মুখে এই ঘটনায় সমস্যা হচ্ছে। স্বাস্থ্যভবনের নজরে আনা হয়েছে। সেখান থেকে কী নির্দেশ দেওয়া হয়, সে দিকেই আমরা তাকিয়ে রয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy