কথা বলছেন সাংসদ। নিজস্ব চিত্র
আদিবাসীরা না-চাইলে ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা খনি হবে না বলে দাবি করলেন বিজেপি সমর্থিত রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। শুক্রবার মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকার আদিবাসী গ্রামে গিয়ে এ কথা বলেন স্বপনবাবু। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, আদিবাসীদের বঞ্চিত করে ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা খনির কাজ হবে না।
এ দিন দুপুরে প্রস্তাবিত খনি এলাকায় থাকা তিনটি আদিবাসী গ্রাম গাবারবাথান, হরিণশিঙা, দেওয়ানগঞ্জের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করে খনি গড়া নিয়ে তাঁরা কী চাইছেন জানতে চান স্বপনবাবু। এলাকার ‘অনুন্নয়’ নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধে বেশ কিছু কথা বলার পাশাপাশি খনি গড়ার প্রসঙ্গে গাবারবাথানে আদিবাসীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘ যতক্ষণ না আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি ভাবে কথা বলা হচ্ছে, ততক্ষণ এখানে কোনও কয়লা খনি করার পরিকল্পনা হতে পারে না। আপনারা যদি না বলেন, তাহলে না। আর কেউ এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। আধিকারিক আসুক বা ক্যাডার আসুক তাঁরা নিতে পারবে না।’’ স্বপনবাবুর সংযোজন, ‘‘কোনও প্রধানমন্ত্রী আসবেন না। প্রধানমন্ত্রী এলে অন্য কারণে আসবেন, খনির জন্য নয়। আপনাদের কথা যথাস্থানে পৌঁছে দেব।’’
গত বছর পুজোর পরে এই প্রকল্পের সূচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ই স্বপন দাশগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানান, তাঁর মনে হয়, দুর্গাপুজোর পরে ওই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি ভুল বার্তা দিতে পারে। চিঠিতে ওই সাংসদ জানিয়েছিলেন, পরিকল্পনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রকল্পটির সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব কেমন হতে পারে, তা খতিয়ে দেখা হয়নি।
ঘটনা হল, সেই সামাজিক প্রভাব সমীক্ষা। সমীক্ষার কাজই এখন চলছে। এখনও পর্যন্ত মসৃণ ভাবেই সেই কাজ চলছে। সমীক্ষার কাজ শুর করার আগে দফায় দফায় মহম্মদবাজারের জন প্রতিনিধি এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। ওই সমীক্ষার উপরে ভিত্তি করেই পুনর্বাসন প্যাকেজ ঠিক করার কথা। তবে সেই প্যাকেজ বা কী শর্তে জমি নেওয়া হবে—সে-সব নিয়ে আদিবাসীদের মধ্যে ধোঁয়াশা রয়েছে। আদিবাসী সমাজের একটা অংশ আলোচনার আগেই খনি গড়ার বিপক্ষে। এই আবহে স্বপনবাবুর মহম্মদবাজারের আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
ঠিক ততটাই তাৎপর্যপূর্ণ, বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের কয়লা খনি প্রসঙ্গে বক্তব্য। জঙ্গলমহল কাপের ফুটবল ফাইনাল উপলক্ষে এ দিন মহম্মদবাজারেই ছিলেন পুলিশ সুপার। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আমি আবার এখানে আসব। ডিএম সাহেবকেও নিয়ে আসব। রাজ্য সরকার এই এলাকায় সর্ববৃহৎ কয়লাখনির সূচনা করছেন। সার্ভে শুরু হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি, আপনাদের বাদ দিয়ে এখানে কোনও কাজ হবে না। আপনাদের সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই এখানে কয়লা শিল্পাঞ্চলের কাজ শুরু হবে। আমরা সহযোগিতার আশা রাখছি।’’
তবে, স্বপনবাবুর মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিতর্ক বাড়াতে নারাজ তৃণমূল নেতারা। দলের জেলা সহ সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহের বক্তব্য, ‘‘এই প্রকল্প রূপায়িত হলে বীরভূম ও রাজ্যের আর্থিক উন্নয়ন ঘটবে। কর্মসংস্থান হবে। কারও সমস্যা না-করেই প্রকল্প রূপায়ণ করার চেষ্টা চলছে। সকলের উচিত রাজ্যের স্বার্থে প্রকল্প রূপায়ণে সহযোগিতা করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy