পুরুলিয়ার মণ্ডপে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো ও সুজিত মাহাতো
সরস্বতী পুজোর উচ্ছ্বাসে ভাঙল করোনা-বিধি। শনিবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার নানা এলাকায় বিধি ভেঙে পুজোর আনন্দে মাততে দেখা গিয়েছে অল্পবয়সিদের। প্রায় কারও মুখে ছিল না মাস্ক। ছিল না দূরত্ববিধিও। দু’-একটি ক্ষেত্রে উঠেছে ডিজের তাণ্ডবের অভিযোগও।
পুজোর আয়োজন নিয়ে চিন্তা বেড়েছিল শুক্রবার দিনভর খারাপ আবহাওয়ায়। তবে এ দিন সকাল থেকে ঝকঝকে আকাশে দেখে হাসি ফোটে কচিকাঁচাদের মুখে। পুজো শেষের পরে, স্কুলের গেটে গেটে ছাত্রছাত্রীদের নিজস্বী তোলার হিড়িক ছিল দিনভর। তবে মাস্ক প্রায় ছিল না। শিক্ষকদের সামনে বিধি মানা হলেও, তাঁরা চোখের আড়াল হতেই মাস্ক এসেছে হাতে। বাঁকুড়া শহরের রাস্তাগুলিতে ছিল অল্পবয়সিদের ভিড়। খাবারের দোকানগুলিও ছিল ভিড়ে ঠাসা। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা দেখা যায়নি। একই ছবি দেখা গিয়েছে বিষ্ণুপুর শহরেও। পড়ুয়াদের বাঁধভাঙা ভিড়ে রীতিমতো চিন্তিত দেখিয়েছে অনেককে। তাঁদের বক্তব্য, সতর্কতা মেনে পুজোর আনন্দে শামিল হওয়া উচিত ছিল।
মাস্ক নেই কেন—প্রশ্ন শুনেই তা এড়িয়ে গিয়েছে অনেকে। কারও আবার উত্তর, “পুজোর দিনে মাস্ক পরে কি অঞ্জলি দেওয়া বা ঘোরাঘুরি করা যায়!” আবার কারও ঝটিতি জবাব, ‘‘সেলফি তুলব বলে মাস্ক পকেটে রেখেছি। সময়ে পরে নেব।’’ বিধি ভাঙার ছবি ধরা পড়েছে বড়জোড়া, পাত্রসায়র, ও ইন্দাসের নানা এলাকায়।
দক্ষিণ বাঁকুড়ার মণ্ডপগুলিতে স্কুলপড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। ভিড় ছিল খাতড়া কংসাবতী শিশু বিদ্যালয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, খাতড়া হাইস্কুল-সহ অন্য স্কুলগুলিতে। খাতড়া থানার এক পুলিশ অফিসার জানান, পুজোয় দূরত্ববিধি বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহারের বার্তা দিয়ে আগাম প্রচার হয়েছে। এ দিনও পুলিশকর্মীরা বিভিন্ন এলাকার পুজোমণ্ডপগুলিতে ঘুরে মাস্ক ও দূরত্ববিধি বজায় রাখার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করেছেন।
এ সবের মধ্যে ডিজের তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে তালড্যাংরা ও ইঁদপুরের বিভিন্ন গ্রামে। ইঁদপুরের ছাতাপুর, ডাঙারামপুর, হিরাশোল-সহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে দিনভর সাউন্ডবক্সের তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন অংশের ছবিটাও ছিল কম-বেশি একই। পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, মানবাজার, বান্দোয়ান বা ঝালদা—সর্বত্রই পথের দখল নেয় অল্পবয়সিরা। তবে করোনা-বিধি না-মানার ছবিটাই চোখে পড়েছে বেশি।
বোরো থানার পেঁচাড়া নব তরুণ সঙ্ঘের মণ্ডপে সরস্বতীকে সেবিকা রূপে দেখানো হয়েছে। দেবীর চার হাতে ছিল মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, টিকার সিরিঞ্জ ও হাত ধোয়ায় সরঞ্জাম। ওই গ্রামেরই মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে বিশাল আকৃতির শিবলিঙ্গ দেখতেও ভিড় জমে। দুই পুজো কমিটির কর্তাদেরই দাবি, মাস্ক না পরে, কাউকে মণ্ডপে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। স্বেচ্ছাসেবকেরা নিয়ম মানাতে মোতায়েন ছিলেন।
ঝালদা শহরের পুজো মণ্ডপগুলিতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তুলিনের ইউনাইটেড ক্লাবের কর্তারা মণ্ডপে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছিলেন। ইলু গ্রামেও ধুমধাম করে পুজো হয়েছে। সেখানকার বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাবের অন্যতম কর্তা বংশীধর মণ্ডল বলেন, “মাস্ক না পরে যাতে কেউ ভেতরে ঢোকেন, সে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া আছে। আমরাও নজর রেখেছি।” মানবাজার ও রঘুনাথপুরেও মণ্ডপমুখী ভিড় দেখা গিয়েছে। তবে না ছিল দূরত্ববিধি, না দেখা গিয়েছে মাস্ক পরার প্রবণতা। তবে, কোথাও সে ভাবে ডিজে-সাউন্ড বক্সের তাণ্ডবের অভিযোগ ওঠেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy