বান্দোয়ানের গুড়ুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র।
বাসিন্দাদের দাবি, খাতায়-কলমে এক জন ডাক্তার বরাদ্দ রয়েছেন। যদিও বছর দেড়েক ধরে তিনি আসেন না। তার বদলে ফার্মাসিস্ট দিয়েই চলছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের গুঁড়ুর নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী ভাবে ডাক্তার দেওয়ার দাবিতে সবর হয়েছেন এলাকার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। সম্প্রতি তাঁরা এ নিয়ে বান্দোয়ানের বিডিও এবং বিএমওএইচ-এর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানান।
পুরুলিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে চাপ বেশি। সব সময়েই সেখানে ডাক্তার থাকা দরকার। জেলায় এ মুহূর্তে ডাক্তারদের অনেক শূন্যপদ রয়েছে। বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাপ থাকায় সেখানে গুঁড়ুরের ডাক্তারকে বসানো হচ্ছে। আমরা সাধ্যমতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েকবছর আগে গুঁড়ুর গ্রামের অদূরে ১৭ বিঘা জমির উপরে গুড়ুর নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠে। চালু হয় বহির্বিভাগ। সে সময়ে ডাক্তার ও নার্স ছিলেন। গুঁড়ুর, তুলসিডি, পারবাইদ, শালবনি, পশাড়্যা-সহ কমবেশি ১৩টি গ্রামের ভরসা হয়ে ওঠে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। লাগোয়া ঝাড়খণ্ডেরও কিছু গ্রামের মানুষজন সেখানে চিকিৎসা করাতে আসতেন। বাসিন্দাদের দাবি, বছর দেড়েক ধরেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার বসেন না। এক জন করে ফার্মাসিস্ট, নার্স ও গ্রুপ ডি কর্মী ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন।
পারবাইদ গ্রামের বাসিন্দা জয়দেব মাহাতো বলেন, ‘‘ডাক্তার না থাকলেও কারও অসুখ করলে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই আমরা যাই। ফার্মাসিস্টই এখন আমাদের পরীক্ষা করে ওষুধপত্র দেন। কিন্তু অসুখ একটু জটিল হলে, তখন বড় কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বলা হয়। বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেশ দূরে। সাইকেল বা মোটরবাইকে সেখানে যেতে হয়। যোগাযোগের অন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। ডাক্তার থাকলে, অনেক রোগের চিকিৎসা এখানেই করানো যেত।’’
যদিও স্থানীয় বাসিন্দা গুরুপদ মুর্মু, বিকাশচন্দ্র মাহাতো দাবি করেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, গুঁড়ুর নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য এক জন ডাক্তার খাতায়-কলমে রয়েছেন। কিন্তু তিনি কেন আসেন না, জানি না।’’ যদিও ওই ডাক্তারকে ফোন করা হলে তিনি তা কেটে দেন। জবাব দেননি মেসেজ়ের।
বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে। মোট আট জন ডাক্তার রয়েছেন। সরকারি খাতা অনুযায়ী, বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য চার জন, চিরুডি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন এবং এক জন করে ডাক্তার থাকার কথা লতাপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গুঁড়ুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
ওই সূত্রের খবর, বর্তমানে বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দু’জন ডাক্তারকে পাঠানো হয়েছে মানবাজার ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে লতাপাড়া ও গুঁড়ুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই ডাক্তারকে বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে বান্দোয়ানের বিএমওএইচ কাজিরাম মুর্মুকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজ়েরও।
গুঁড়ুর পঞ্চায়েতের প্রধান বনলতা সিং সর্দার বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েতের ন’টি সংসদ তথা ১৩টি গ্রামের বাসিন্দারা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। ডাক্তার না থাকায় সবারই সমস্যা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ বিডিও (বান্দোয়ান) কাসিফ সাবিরের আশ্বাস, ‘‘ডাক্তার চেয়ে গ্রামবাসীর দাবিপত্র পেয়েছি। এ নিয়ে জেলা স্তরে কয়েকবার কথা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy