এমনিতে খাদ্যরসিক অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে বীরভূম। দীর্ঘ সফর। তার উপর আসা ইস্তক নেতানেত্রী, সমর্থক, অনুগামীদের ভিড়। চিৎকার-চেঁচামেচি, উচ্ছ্বাস-আনন্দ। সবাই চান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। ১৮ মাস পরে বাড়ি ফিরে কেঁদে ফেলেছেন ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। একের পর এক অভ্যাগতের সঙ্গে সাক্ষাৎপর্ব মিটিয়ে বেলার দিকেই খাওয়াদাওয়া করেছেন তৃণমূল নেতা। পাতে ছিল ভাত, মাছের পদ এবং কেষ্টর ভীষণ প্রিয় পোস্তর বড়া। নেড়েচেড়ে সামান্যই খেয়েছেন। তার পর টানা ঘুমিয়েছেন অনুব্রত। নেতার পরিজন এবং ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সফরের ক্লান্তি তো রয়েইছে। তা ছাড়া শরীরটা নাকি ভাল নেই অনুব্রতের।
২০২২ সালের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি জেলবন্দি ছিলেন। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। পরে ইডির মামলায় তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয় কেষ্টকে। ২০২৩ সালের ২১ মার্চ থেকে তিহাড়েই বন্দি ছিলেন তিনি। আর ২০২৩ সালে ওই গরু পাচার মামলাতেই কন্যা সুকন্যাকেও গ্রেফতার করে ইডি। তারও ঠাঁই হয়েছিল তিহাড় জেলে। সপ্তাহখানেক আগে জামিনে প্রথম মুক্তি পান মেয়ে। তার পর গত শুক্রবার বাবা। আইনি বিষয় মিটিয়ে সোমবার তিহাড় থেকে ছাড়া পান অনুব্রত। তার পর মেয়ের সঙ্গে রাতেই ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতাগামী বিমান ধরেন। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা থেকে সড়কপথে সকন্যা বাড়ি ফিরেছেন অনুব্রত।
বোলপুরে ফেরা ইস্তক একের পর এক নেতার সঙ্গে চলে দেখাসাক্ষাৎ এবং কথাবার্তা। অনেক অনুগামী এবং কর্মীও দেখা করে গিয়েছেন তাঁদের ‘কেষ্টদা’র সঙ্গে। অনুব্রতের পরিবারের দাবি, হাসিমুখেই ছিলেন নেতা। প্রায় দেড় বছর পর ‘বাড়ির ছেলে’কে বাড়িতে পেয়ে আনন্দিত পরিবারের সদস্য থেকে আত্মীয়স্বজন। অনুব্রতের ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডল ওরফে বাবলু জানিয়েছেন, অনেক দিন পর বাড়ির রান্না খেয়ে দাদা খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘দাদার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব ভাল না হলেও বাড়ির লোকেদের ভালবাসায় তৈরি খাবার ওকে বেশ আনন্দ দিয়েছে।’’ তিনিই জানালেন, দুপুরে ভাত আর পোস্তর বড়া খেয়েছেন তৃণমূল নেতা। তবে খাবারের পরিমাণ খুব কম। হয়তো দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি। আবার অসুস্থতাও হতে পারে বলে ভাবিত বাবলু। তাঁর কথায়, ‘‘বেশি কিছু খায়নি। খাওয়াদাওয়া এ বার থেকে নিশ্চয়ই কন্ট্রোল করবে। দাদাকে হয়তো চিকিৎসকেরাও দেখতে আসবেন।’’
অতীতে দলীয় কার্যালয়ে ভোজের আয়োজনে কেষ্টর পছন্দের পদ পোস্ত থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। ঘনিষ্ঠরা জানান, বাড়িতে থাকলে প্রতি দিন পোস্ত খাওয়া তাঁর একপ্রকার ‘রুটিন’। কিন্তু জেলযাত্রার পর ‘মেনু’ পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। প্রিয় খাবারও আর নাগালের মধ্যে ছিল না। তাই বাড়ি ফিরতেই কেষ্টর জন্য রান্না হয়েছিল পোস্তর বড়া। কেষ্ট খেয়েছেন। তবে আগের চেয়ে কমই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy