Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
বাঁকুড়ায় প্রস্তুতি তুঙ্গে

এসি বাসে ভ্রাম্যমান রক্ত-শিবির

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভলভো বাসে একটি ভ্রাম্যমান রক্তদান শিবির হবে বাঁকুড়ায়। জেলা জুড়ে চিরাচরিত শিবির হবে আরও অনেক। প্রস্তুতি তুঙ্গে। শুধু ব্লাড ব্যাঙ্কে কর্মীর অভাব কিছুটা ভাবাচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ১২:১০
Share: Save:

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভলভো বাসে একটি ভ্রাম্যমান রক্তদান শিবির হবে বাঁকুড়ায়। জেলা জুড়ে চিরাচরিত শিবির হবে আরও অনেক। প্রস্তুতি তুঙ্গে। শুধু ব্লাড ব্যাঙ্কে কর্মীর অভাব কিছুটা ভাবাচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের।

গ্রীষ্মকালীন রক্তের ঘাটতি মেটাতে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আগামী শনিবার, ২০ মে থেকে জেলা জুড়ে শুরু হতে চলেছে রক্তদান শিবির। সেখানে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনিক কর্তারা এবং বেশ কিছু স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠন যোগ দেবে। ৭ জুন পর্যন্ত লাগাতার শিবির চলতে থাকবে।

প্রথম দফায়, শনিবার থেকে টানা সাত দিন বাঁকুড়া পুলিশ রক্তদান করবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সাত দিনে ছ’টি থানা ও পুলিশ লাইনের কর্মীরা রক্তদান করবেন। গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই বাঁকুড়া পুলিশ ক্যালেন্ডার করে প্রতি মাসে বিভিন্ন থানায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে আসছে। তার ফলে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের খরা অনেকটাই কেটেছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “এই বিশেষ উদ্যোগে শিবিরগুলিতে ব্লাড ব্যাঙ্কের চাহিদা মতো আমরা রক্ত দেব। একই সঙ্গে প্রতি মাসে আমরা যেমন শিবির করে থাকি, সেটা চলবে।’’

দ্বিতীয় দফায়, ২৭ মে থেকে রক্তদান শুরু করবে জেলা প্রশাসন। জেলার ২২টি ব্লক দফতর, তিনটি পুরসভা ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা আলাদা আলাদা ভাবে শিবির করবেন। প্রশাসনিক ভাবে দাবি করা হয়েছে, এই কর্মসূচিতে প্রশাসনের কর্তারাই কম বেশি ২৭০০ ইউনিট রক্ত দেবেন। পাশাপাশি, পুলিশ বিভাগ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠন মিলিত ভাবে তিন হাজার ইউনিটের বেশি রক্ত সংগ্রহ করতে পারে।

বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিমধ্যেই রক্তদান শিবিরের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চান শিবিরগুলি বিকেল বা সন্ধ্যায় হোক। না হলে শিবির করতে হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। সেই বিষয়টি মাথায় রাখছে জেলা প্রশাসন। একটি এসি ভলভো বাসেও রক্ত দানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিবির শুরুর দিনই বাসটি জেলায় আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলায় বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও খাতড়ায় একটি করে ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। দৈনিক গড়ে ১১০-১২০ ইউনিট রক্তের চাহিদা থাকে এই তিনটি ব্লাড ব্যাঙ্কে। জেলাশাসকের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগে রক্তের সঙ্কট অনেকটাই মিটবে। আমরা এই শিবিরগুলির প্রচারেও খুব জোর দিচ্ছি।”

জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে বাঁকুড়ায় তিন হাজার এবং বিষ্ণুপুর আর খাতড়া ব্লাড ব্যাঙ্কে ছ’শো ইউনিট করে রক্ত রাখার পরিকাঠামো রয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তাদের দাবি, শিবির থেকে সংগ্রহ করা রক্ত সংরক্ষণে কোনও সমস্যা হবে না। তবে শিবির পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার ও টেকনিশিয়ানের অভাব ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। তিনটি ব্লাড ব্যাঙ্কে মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন ১০ জন। টেকনিশিয়ান রয়েছেন ২৩ জন। রক্তদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার দিন থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত মেডিক্যাল অফিসার ও টেকনিশিয়ানদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও এত বড় কর্মকাণ্ড সামলানোর জন্য এই লোকবল যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।

সমস্যার সমাধানে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সাহায্যও চেয়েছেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান। তিনি বলেন, “সবই ঠিকঠাক আছে। স্বাস্থ্য দফতর যাতে তাঁদের মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে আমাদের সাহায্য করেন সেই আর্জি জানিয়েছি।” বাঁকুড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলেন, “সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলিতে আমাদের যে মেডিক্যাল অফিসারেরা রয়েছেন তাঁদের আমরা শিবিরে পাঠাব। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে।” শিবির পরিচালনায় কোনও সমস্যা হবে না বলে তাঁর দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile Blood donation bus Blood donation Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy