মডেল: এমনই হতে চলেছে বিশ্বভারতী পৌষমেলার মাঠের নির্মীয়মাণ ঘেরাটোপ। আড়াই ফুটের পাঁচিল ও তার মাঝে এবং উপরে থাকবে লোহার রেলিং। বিশ্বভারতীর আন্তর্জাতিক অতিথিনিবাসের সামনে রাখা হয়েছে এই মডেলটি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, তথ্য: সৌরভ চক্রবর্তী
ঘটনার দেড় মাস পর, শনিবার জামিন পেলেন বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল ভাঙার ঘটনায় অভিযুক্ত দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউড়ি। শুধু নরেশবাবুই নন, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বোলপুরের দুই পুর-প্রশাসক সুকান্ত হাজরা ও ওমর শেখ এবং বিশ্বভারতীর প্রাক্তন কর্মী গগন সরকারও জামিন পেয়েছেন। সরকারি কৌঁসুলি মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জেলা আদালতে সকলের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। অভিযুক্তদের আবেদন ক্রমে জেলা জজ বিশ্বরূপ বসু তা মঞ্জুর করেন।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের কেন জামিন দেওয়া হবে তা নিয়ে বেশ খানিকটা সওয়াল জবাব হয় দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে। সরকারি কৌঁসুলির সংযোজন, ‘‘সকলের বিরুদ্ধেই একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে জামিন অযোগ্য ধারা বলতে শুধু চুরির ধারা যুক্ত ছিল। অভিযুক্তদের তাতে জড়িত থাকার পক্ষে কোনও জোরালো যুক্তি পেশ করেনি পুলিশ।’’ যদিও বিধায়ক-সহ তৃণমূল নেতাদের এত ‘সহজ’ জামিনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অনেকে। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ মানে নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘একটি অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষেই ধারা প্রয়োগ হয়ে থাকে। তদন্তকারী আধিকারিকের উপরেই সেটা নির্ভর করে। বিশ্বভারতী অভিযোগ যেমন করেছিল, তেমনই বিশ্বভারতী নিরাপত্তা রক্ষী ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও প্রায় একই ধরনের পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পুলিশের কাছে। শনিবার জেলা আদালতে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা রক্ষী ও অধিকারিক মিলিয়ে তিন জনও জামিন পেয়েছেন।’’
পৌষমেলার মাঠকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরার চেষ্টা শুরু হতেই ক্ষোভ, প্রতিবাদের ঝড় ওঠে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। ১৭ অগস্ট জনতা মিছিল করে এসে পে-লোডার এনে গুঁড়িয়ে দেয় মেলার মূল প্রবেশদ্বার। ছুড়ে ফেলা হয়েছিল পাঁচিলের নির্মাণ সামগ্রী। মিছিলে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের বিধায়ক, নেতা কর্মীদের। ঘটনার পর নরেশ বাউরি, সুকান্ত হাজরা, ওমর শেখ, গগন সরকারদের দায়ী করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপকক্ষ। দায়ী করা হয়েছিল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বোলপুর, কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ঘটক, হস্তশিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা, এপিডিআর সদস্য শৈলেন মিশ্র-সহ ন’জনকে। ওই ন’জন-সহ বাকি আরও অজ্ঞাত ১০০ জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে বিশ্বভারতী।
ওই মামলায় দিন কয়েক আগে আগেই জামিন পেয়েছেন পাঁচ জন। শনিবার জামিন পেলেন বাকি চারজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘জামিন অযোগ্য ধারা প্রয়োগ হতে পারে এমন দুটি অভিযোগকেই পুলিশ কার্যত পাত্তা দেয়নি বা এড়িয়ে গিয়েছে। একটি অভিযোগ ছিল সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার। আরেকটা প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা।’’ জামিন পাওয়ার পর নরেশবাবু বলছেন, ‘‘যা কিছু হয়েছে পুরোটাই জনরোষে। প্রাক্তনী হিসাবে সেদিন উপস্থিত ছিলাম। কোনও অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy