পরীক্ষা শেষ করে বেরোচ্ছেন পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
প্রতিবাদের রাস্তা দেখিয়েছিলেন অফলাইনে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা। অনলাইনের দাবিতে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দেওয়া তালা ভেঙে বুধবার দুপুরে পরীক্ষায় বসেছিলেন ইচ্ছুকেরা। তাতেও সব ভবনের সব ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। ফলে, বেনজির ভাবে বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হল বিশ্বভারতীতে।
গভীর রাতে কেন পরীক্ষা নেওয়া হল, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, রাতে পরীক্ষা দেওয়া ইচ্ছুক পড়ুয়াদেরই ‘আন্তরিক ও স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্ত’ ছিল। তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং আধিকারিকেরা পরীক্ষা ভাল ভাবেনেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার আগে কয়েক জন পরীক্ষার্থী ক্লাসঘরের ভিডিয়ো ছড়িয়েছেন। এমন সিদ্ধান্তে অনলাইনের পক্ষে আন্দোলনকারীরাও হকচকিয়ে গিয়েছেন। ফলে, সোম থেকে বুধবার, টানা তিন দিন বিক্ষোভ চালিয়ে গেলেও বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কিছু হয়নি। নির্বিঘ্নেই এ দিন অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়েছে। আন্দোলন অনেকটাই স্তিমিত হয়েছে।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বিক্ষোভের জেরে যে-সব বিভাগে বুধবার বিকেল পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, সেগুলিতে রাতেই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে পড়ুয়াদের জানানো হয়। সেই মতো বুধবার বিশ্বভারতীর দর্শন ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিভাগে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এবং রুরাল স্টাডিজ বিভাগে রাত ১১ টা থেকে ২টো পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের জন্য তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন না। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে তাঁদের বেশ কিছু অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে। অভিভাবকেরাও বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তাঁদেরই কয়েক জদন এ দিন বলেন, ‘‘কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে মাঝরাত পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে বলে আজ পর্যন্ত আমরা শুনিনি!”
রাতে পরীক্ষা নেওয়া সমালোচনা করে টিএমসিপি-র বিশ্বভারতী ইউনিটের সভাপতি মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন , “জোর করে এই ধরনের পরীক্ষা নেওয়াকে আমরা সমর্থন করছি না। এটাও কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচয়। ছাত্রদের বুঝিয়ে পরীক্ষা অন্য দিনও নেওয়া যেতে পারত।’’ প্রবীণ আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বিশ্বভারতীতে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। গভীর রাতে এই ধরনের পরীক্ষা আগে এখানে কখনও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এমন হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।’’
প্রেস বিবৃতি বিশ্বভারতী অবশ্য জানিয়েছে, পল্লিচর্চা কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধান শান্তনু রক্ষীকে বুধবার রাত ৯ টার পরে পড়ুয়ারা ফোন করে সে দিনের নির্ধারিত পরীক্ষায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ওই অধ্যাপক উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত জানতে চান। এর পরেই কর্তৃপক্ষ রাতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ করে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy