স্কুলে তালাবন্দি অবস্থায় শিক্ষকরা। — নিজস্ব চিত্র।
মিড ডে মিল নিয়ে একাধিক অভিযোগে শিক্ষকদের স্কুলে তালাবন্দি করে রাখলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা। শনিবার এমনই অভিযোগ উঠেছে বাঁকুড়ার ছাতনা চণ্ডীদাস বিদ্যাপীঠে।
ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে মিড ডে মিল রান্না করে দেওয়ার পারিশ্রমিক জোটেনি তিন মাস ধরে। তাঁদের আরও অভিযোগ, দোকানে বকেয়া রয়েছে মিড ডে মিলের জন্য কেনা ডিম, মশলা এবং জ্বালানির। সেই বিলের অঙ্কটাও অনেক। স্কুলের শিক্ষকদের কাছে বার বার আবেদন করেও কিছু হয়নি। সেই ক্ষোভেই শিক্ষকদের স্কুলে তালাবন্দি করেছেন তাঁরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে শিক্ষকেরা তালাবন্দি ছিলেন। অবশেষে স্বনির্ভর গোষ্ঠীরই এক কর্মী স্কুলে গিয়ে তালা খুলে দেন।
বাঁকুড়া জেলার অন্যতম বড় এবং নামী স্কুল ছাতনা চণ্ডীদাস বিদ্যাপীঠে মিড ডে মিল রান্নার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় ‘শিবশক্তি পুরুষ গোষ্ঠী’ এবং ‘লোকনাথ মহিলা গোষ্ঠী’। এই দু’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মোট ১৮ জন সদস্য পালাবদল করে মিড ডে মিল রান্না করেন। সে জন্য ডিম, মশলা, আনাজ এবং জ্বালানি কেনার দায়িত্বও তাঁদের কাঁধে। স্বনির্ভর দলের এই কর্মীদের মাসিক পারিশ্রমিকের পাশাপাশি মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের তরফে স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই টাকা দেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ গত তিন মাস ধরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সেই টাকা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই নিয়ে শনিবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীদের সঙ্গে স্কুলেরই এক শিক্ষকের বচসা বাধে। এর পর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীদের একাংশ শিক্ষকদের তালাবন্দি করে চলে যান।
এ নিয়ে স্বপন কুম্ভকার নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে আমরা পারিশ্রমিক পাচ্ছি না। স্থানীয় যে দোকান থেকে আমরা ধারে ডিম, মশলা এবং জ্বালানি কিনে আনি সেই দোকানে প্রায় ৬০ হাজার টাকা বকেয়া। স্কুল কর্তৃপক্ষ সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা করেননি।’’
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে স্কুলে তালাবন্দি থাকা স্নেহাশিস মণ্ডল নামে এক শিক্ষক বলেন, ‘‘মিড ডে মিলের কর্মীরা আজ যে ভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন তাতে আমরা কিছুটা হলেও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পেটে টান পড়লে মানুষের এমন আচরণ স্বাভাবিক। সম্প্রতি স্কুলে প্রধান শিক্ষক বদল হওয়ায় এবং আমাদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এমন সমস্যা হচ্ছে।’’
স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ব্যাসদেব চক্রবর্তীর বক্তব্য,‘‘আমি প্রধান শিক্ষক হিসাবে গত ৩১ মে দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেখছি স্কুলের কাগজপত্র এবং হিসাবে বহু টাকার গরমিল রয়েছে। গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মিড ডে মিলের কর্মীদের বিষয়টাও আমার নজরে এসেছে। আমি দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি আগামী সপ্তাহের শুরুতেই মিড ডে মিলের কর্মীরা তাঁদের বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy