বাইরে চোখ ঝলসানো রোদ। আর ঘরের ভিতরে দমবন্ধ করা ভ্যাপসা গরম। রবিবার থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে হাঁসফাঁস অবস্থা বাঁকুড়াবাসীর।
বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন তপোবন গ্রামে জমি থেকে তিল তুলছিলেন এক যুবক। গায়ের জামা ঘামে ভিজে একশা। মুখের ঘাম মুছতে মুছতে বলেন, “বৃষ্টি না হলে এ বার বাঁচা দায়। দিনে তিন চার বার স্নান করেও শান্তি পাচ্ছি না। কোনও কাজই করা যাচ্ছে না।” বাঁকুড়া জেলাশাসকের দফতরে সরকারি কর্মীরা পাখার তলায় বসেও গলগল করে ঘামছেন। রুমালে ঘাম মুছতে মুছতে এক কর্মী বলেন, “কেরলে তো বর্ষা ঢুকে গেল। এ বার এই রাজ্যে ঢুকলে রক্ষে পাই। শেষ কবে যে বৃষ্টি হয়েছিল ভুলেই গিয়েছি।”
বেশি দিন না। গত ৫ জুনই বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সূর্যের তেজে সেই স্মৃতি উবে যাওয়ার জোগাড়। এই পরিস্থিতিতে যাঁদের নিয়মিত বাসে বা ট্রেনে যাতায়াত করতে হচ্ছে, তাঁদের অস্বস্তি আরও বেশি। একটি গৃহঋণ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বড়জোড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ ঘোষ বলেন, “বাসের ভিতরে দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি। রোদের দাপটে জানালার পাশে কেউ বসতে চাইছে না। বাইরে গরম বাতাসের জন্য বাধ্য হয়ে বাসের জানালাও বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ঘন ঘন জল তেষ্টা পাচ্ছে।”
বাঁকুড়া আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, গত কয়েক দিন জেলার তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও রবিবার থেকে ৪০ ডিগ্রি পার হয়ে গিয়েছে। রবিবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৪১.৪ ডিগ্রি। তাপমাত্রার ফারাক কিছুটা হলেও অস্বস্তি একেবারেই কমেনি। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ৩০ মে ৭.৬ ও ৩১ মে ৩.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। পরপর দু’দিন ঝড়বৃষ্টির জন্য তাপমাত্রা কিছুটা কমেছিল। মাঝে ৫ জুন সকালে ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তার পরে টানা পাঁচ দিন আর বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। এখন মানুষ তাকিয়ে রয়েছেন, কালো মেঘের পথ চেয়ে।
হাওয়া অফিস নির্দিষ্ট ভাবে কবে বর্ষা ঢুকবে তা জানাতে পারেনি। এখন স্থানীয় ভাবে মেঘ ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি হয় কি না, সেই আশা আঁকড়ে রয়েছেন সবাই। সোমবার বিকেলের পরে ফুরফুরে হাওয়া বইতে শুরু করায় ঘরের বাইরে কিছু হলেও স্বস্তি মিলছে। তবে বৃষ্টি না হলে ফের অস্বস্তির গরমের সঙ্গে যুঝতে হবে বাঁকুড়াবাসীকে।
বাঁকুড়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক প্রসুণকুমার দাস বলেন, “আমরা প্রতিটি ব্লক ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে গরমে অসুস্থ হওয়া থেকে বাঁচতে কী করা উচিত সেই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy