বড়দিন মানেই চড়ুইভাতি। তাই রবিবার সকাল হতেই সেই দৃশ্যই দেখা গেল জেলার নানা জায়গায়। নীলনির্জন জলাধার হোক বা সিউড়ির তসরকাটা জঙ্গল, অথবা মহম্মদবাজারের দ্বারবাসিনী মন্দির— একাধিক জায়গায় চড়ুইভাতির আসরে মেতে উঠলেন মানুষজন।
২৫ ডিসেম্বর থেকেই জেলায় চড়ুইভাতির আসর জমে ওঠে। সেই চিত্র অব্যাহত থাকল এ বছরও। এ দিন সকালে সিউড়ির তসরকাটা জঙ্গলে দেখা গেল প্রায় আটটি দল নিজেদের মধ্যে চড়ুইভাতির আনন্দে মেতে উঠেছেন। জোর কদমে চলছে রান্নাবান্না আর আড্ডা পর্ব। কোথাও আবার বক্স বাজিয়ে চলছে নাচগান।
একই দৃশ্য নীলনির্জন জলাধারে। সেখানেও চলছে রান্নাবান্না, নাচগান এবং ছবি তোলা। নীলনির্জল এলাকায় পিকনিক করতে যাওয়া স্বরলিপি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বড়দিনে কেক কাটার একটা রীতি আছে। তাই আমরা এখানেই কেক নিয়ে এসেছিলাম। সবাই মিলে কেক কেটেছি।’’ পিউ মল্লিকের কথায়, ‘‘শিক্ষকদের সঙ্গে এসেছি। সকলে একসঙ্গে চড়ুইভাতির আনন্দই আলাদা। আমরাও সেই আনন্দ উপভোগ করছি।’’
তবে কেবল তসরকাটা জঙ্গল বা নীলনির্জন জলাধার নয়। জেলার প্রায় সমস্ত পিকনিক স্পটে এ দিন কোথাও অল্প বিস্তর তো কোথাও বেশি ভিড় দেখা গিয়েছে। ভিড় ছিল মহম্মদবাজার ব্লকের পলাশবাসিনী ও দ্বারবাসিনী মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের ফুল্লাইপুর গ্রামের পাশেই রয়েছে পলাশবাসিনী মন্দির। হিংলো পঞ্চায়েতের কাপিষ্ঠা গ্রাম সংলগ্ন ঝাড়খণ্ড লাগোয়া দ্বারকা নদের তীরে রয়েছে ঘন জঙ্গলে ঘেরা দ্বারবাসিনী মন্দির। দু’টি জায়গাতেই প্রতি বছর চড়ুইভাতি করতে ভিড় জমান বহু মানুষ।
এ বছরও পৌষ মাসের শুরু থেকে ভিড় না দেখা গেলেও বড়দিন উপলক্ষে ভিড় দেখা গিয়েছে দু’টি জায়গাতেই। কোথাও যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ভলান্টিয়ারদের। এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও শব্দ দূষণ রুখতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিজে বক্স বাজানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বোলপুর থেকে আসা অভিরাজ মণ্ডল ও অমিত মণ্ডল এবং মল্লারপুর থেকে আসা অনিতা পাল ও সুদেষ্ণা মণ্ডলেরা বলেন, পৌষ মাস মানেই চড়ুইভাতির মরসুম। তাই আমরা বড় দিনটিকেই বেছে নিয়েছিলাম। মন্দির দর্শনও হয়ে গেল।’’