ফাইল ছবি।
নিজের ওয়ার্ড কি থাকছে, না হাতছাড়া হচ্ছে? এত দিন এই দুর্ভাবনায় ছিলেন দুই জেলার ছয় পুরসভার কাউন্সিলরেরা। শুক্রবার পুরসভাগুলির ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, অনেক পদাধিকারীর নিজেদের ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে কেউ কেউ আপত্তিও তুলছেন।
খসড়া তালিকায় দেখা যাচ্ছে, পুরুলিয়া জেলার দুই পুরসভা পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুরের দুই পুরপ্রধানের ওয়ার্ডই এ বার সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খান, রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান মদন বরাটের সঙ্গে নিজেদের এত দিনের ওয়ার্ড হারাতে পারেন ঝালদার উপপুরপ্রধান কাঞ্চন পাঠকও। তিন জনেই তৃণমূলের।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদের নিজের এলাকা বলে পরিচিত ২২ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার সংরক্ষিত হয়েছে মহিলাদের জন্য। এই তালিকা অপরিবর্তিত থাকলে সামিমদাদ যদি ফের প্রার্থী হন, তা হলে তাঁকে অন্য ওয়ার্ডে লড়তে হবে। তালিকা দেখে তিনি বলেন, ‘‘আগেও সংরক্ষণের জন্য ওয়ার্ড বদল হয়েছে। তবে জিতেছি। সামনের বার দল প্রার্থী করলে অন্য ওয়ার্ডে দাঁড়াব।’’
একই অবস্থা রঘুনাথপুরের পুরপ্রধানেরও। মদনবাবু টানা কুড়ি বছর ধরে ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতছেন। ওই ওয়ার্ড এ বার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। মদনবাবুর দাবি, ‘‘আমার ওয়ার্ডে পুরুষের সংখ্যা বেশি। তার পরেও কী ভাবে মহিলা সংরক্ষিত হল, বুঝতে পারছি না। দলগত ভাবে আপত্তি জানাব। তার পরেও বদল না হলে দল অনুমোদন করলে পাশের ওয়ার্ড থেকে দাঁড়ানোর কথা ভাবছি।”
ঝালদার কাঞ্চনবাবুর ওয়ার্ড বলে পরিচিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডটিও মহিলা সংরক্ষিত। তিনি অবশ্য বলছেন, ‘‘আগামীবার প্রার্থী হব কি না, তা দলই ঠিক করবে।’’ সংরক্ষণের আওতায় পড়েছে ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডটিও। তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এ দিন সুরেশবাবু বলেন, ‘‘দেখি, কী করা যায়।’’
পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুরে তাদের চার কাউন্সিলরেরই ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়ে পড়ায় খসড়া তালিকা নিয়ে ‘অন্য রকম গন্ধ’ পাচ্ছে সিপিএম। রঘুনাথপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রদীপ দাস-সহ তিন কাউন্সিলরের আসন সংরক্ষিত হয়েছে। পুরুলিয়াতে সিপিএমের এক মাত্র কাউন্সিলর মিতা চৌধুরীর ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘তালিকা নিয়ে দলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
বাঁকুড়া জেলায় কোনও পুরপ্রধানের ওয়ার্ড সংরক্ষিত না হলেও দুই উপপুরপ্রধান ওই সমস্যায় পড়েছেন। বাঁকুড়ার উপপুরপ্রধান দিলীপ আগরওয়ালের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এ বার মহিলা সংরক্ষিত হয়েছে। সোনামুখীর উপপুরপ্রধান অমরনাথ সু-র ৯ নম্বর ওয়ার্ডও তফসিলি মহিলাদের সরংক্ষিত হয়েছে। দু’জনেই তৃণমূলের। দুই নেতাই বলেন, ‘‘দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’
২০০৫ সাল থেকে বাঁকুড়ার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে জিতে আসা স্বরূপ সেনের আসনটিও এ বার তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। স্বরূপবাবু বছরখানেক আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বার প্রার্থী হব কি না, তৃণমূল ঠিক করবে।’’
বাঁকুড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ২০০৫ সাল থেকে নির্দল হিসেবে দখলে রেখেছেন দেবাশিস লাহা। ২০১০ সালে ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় নির্দল হয়েই ভোটে লড়ে কাউন্সিলর হন দেবাশিসবাবুর স্ত্রী সঞ্চিতা লাহা। এ বার ফের ১ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। দেবাশিসবাবুর দাবি, ‘‘এ বার ওয়ার্ডটি অসংরক্ষিত থাকার কথা ছিল। কী ভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হল বুঝতে পারছি না। সংশোধনের জন্য আবেদন জানাব।”
বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস ও পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘এটি খসড়া তালিকা। কারও অভিযোগ থাকলে সংশোধনের জন্য দ্রুত আবেদন করতে পারেন।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, খসড়া তালিকা প্রকাশের ১৪ দিনের মধ্যে অভিযোগ শোনা হবে (৩০ জানুয়ারি)। তার পরে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হবে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে
১০ ফেব্রুয়ারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy