—প্রতীকী চিত্র।
সবাই রাজনীতি করেন শহর-কেন্দ্রিক। কেউ পুরপ্রধান, কেউ বা পুরপ্রতিনিধি। কেউ আবার শহর তৃণমূলের সভাপতি। দুই জেলার শাসকদলের শহরের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এ বার ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। তাঁরাই জানাচ্ছেন, অন্যবার পঞ্চায়েত ভোটে শহরের অল্প কিছু নেতা গ্রামাঞ্চলে প্রচারে গেলেও এ বারের মতো দল এত সংখ্যায় নেতাদের নামায়নি।
রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বাবুগ্রাম, শাঁকার মতো কয়েকটি পঞ্চায়েতে পথসভা থেকে ছোটখাট সভার মূল বক্তাই রঘুনাথপুরের শহর তৃণমূল সভাপতি বিষ্ণুচরণ মেহেতা। রঘুনাথপুরের দুই পুরপ্রতিনিধি তথা যুব ও শ্রমিক নেতা প্রণব দেওঘরিয়া ও মৃত্যুঞ্জয় পরামানিককে দল দায়িত্ব দিয়েছে রঘুনাথপুর ২ ব্লকে। সূত্রের খবর, ওই ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতের কলাগড়া গ্রামের দুই সিপিএম প্রার্থীকে কয়েকদিন আগে তৃণমূলে শামিল করানোর পিছনে বিশেষ ভূমিকা ছিল ওই দুই নেতার। প্রণব ও মৃত্যুঞ্জয় বলছেন, ‘‘প্রতিদিনই প্রার্থীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার, পথসভা, মিছিল করে রাতে বাড়ি ফিরছি।’’
রঘুনাথপুর শহর কমিটির সহ-সভাপতি সুকুমার রায় ও শহরের যুব সভাপতি পিন্টু মাজিকে সাঁতুড়ি ব্লকের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুকুমারের কথায়, ‘‘গ্রামাঞ্চলে রাজনীতি করেই বড় হয়েছি। কর্মসূত্রে শহরে থাকলেও গ্রামাঞ্চলের রাজনীতির ধরনধারনে পুরোটাই অভ্যস্থ। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাচ্ছি।’’ শহরের আর এক নেতা তথা আইনজীবী প্রবীর তিওয়ারিকে দল দায়িত্ব দিয়েছে রঘুনাথপুর ১ ব্লকে।
রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান তরণী বাউরি পুরসভার দৈনিক কাজকর্ম সামলে কোনও না কোনও অঞ্চলে দলের প্রার্থীদের প্রচারে যাচ্ছেন।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালিকেও পুরুলিয়া ২ ব্লকে নির্বাচনের নানা কাজ সামলাচ্ছিলেন। সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর ১ ব্লকে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নির্বাচনে ভাল ফল করায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দলের অন্যতম পুরনো নেতা নবেন্দুকে শেষবেলায় রঘুনাথপুর ১ ব্লকে পাঠানো হয়েছে। বুধবার রঘুনাথপুরে দলের ব্লক কার্যালয়ে ব্লক সভাপতি-সহ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নবেন্দু। পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন নেতাদেরও আশপাশের গ্রামে প্রচারে পাঠানো হচ্ছে। ঝালদা শহরের নেতাদের যার যেখানে যোগাযোগ ভাল, তাঁদের সেখানে প্রচারে যেতে বলা হয়েছে।
বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার বাঁকুড়া ১, ছাতনা, বাঁকুড়ার জয়পুর, খাতড়া, রানিবাঁধ-সহ বেশ কিছু ব্লকে ঘুরছেন। বাঁকুড়ার উপপুরপ্রধান হীরন চট্টরাজকে বাঁকুড়া ২ ব্লকের সানবাঁধা, বিকনা, বাঁকুড়া ১ ব্লকের পাঁচবাগা, সোনাদুয়ার-সহ নানা জায়গায় বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচার, পথসভা করছেন। দলের বাঁকুড়া শহর সভাপতি সিন্টু রজককেও শহর সংলগ্ন গ্রামগুলিতে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে। হীরন বলেন, “শহরের নেতাদের এ বার দল আরও বেশি করে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নামতে নির্দেশ দিয়েছে।’’ বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী শহরের নেতা-নেত্রী ও পুরপ্রতিনিধিরাও প্রচারে নেমেছেন। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সবাই মিলে দলের প্রচার করছি।’’
এ সব দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনায় তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসে পড়ায় তাঁদের উপরে লোকজন তিতিবিরক্ত। তাই অন্য মুখ হিসেবে শহরাঞ্চলের নেতাদের পঞ্চায়েতের ভোটে ব্যবহার করছে তৃণমূল। বিরোধীদের দাবি, তবে সেই নেতারাও কেউ ধোয়া তুলসিপাতা নন। সবটাই সবাই জানেন। ফলে নির্বাচনে এতে বাড়তি সুবিধা কিছু পাবে না শাসকদল। অভিযোগ উড়িয়ে, তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া দাবি করেন, ‘‘শহরের নেতাদের অনেকেই জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তাই দলের নির্দেশে জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া অফিস, আদালত, থানা, হাসপাতালের নানা কাজে লাগোয়া গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দারা শহরের নেতাদের কাছে সাহায্য পান। সেই যোগসূত্র কৌশলগত কারণে কাজে লাগানো হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy