Advertisement
E-Paper

Scarcity of Rain: আর কত দিন মেঘ দে, পানি দে

বাঁকুড়া সদর মহকুমার ছ’টি ব্লকে বড় কোনও সেচ প্রকল্প না থাকায় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প গড়ে জল দেওয়ার চেষ্টা হয়।

পুরুলিয়ার চাকদা চেকড্যাম। ছবি: সুজিত মাহাতো

পুরুলিয়ার চাকদা চেকড্যাম। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রশান্ত পাল  , রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৩
Share
Save

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশ জুড়ে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ চলছে। কিন্তু পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার বহুলাংশের খরিফের চাষ যেন সেই পরাধীন আমলের মতোই বৃষ্টি-নির্ভর থেকে গিয়েছে। এ যুগেও কেন চাষিকে ‘মেঘ দে পানি দে’ বলে ডাক ছাড়তে হবে?

এর মূলে রয়েছে পরিকল্পনার অভাব— বলছেন বিরোধীরা। বছর বারো আগে, সে বারও অনাবৃষ্টিতে পুরুলিয়া জেলায় খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মার খেয়েছিল আমনের চাষ। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ‘পুরুলিয়া জেলা খরা প্রতিরোধ কমিটি’-র মুখপাত্র রঙ্গলাল কুমার বলেন, ‘‘জেলার অধিকাংশ মানুষের পেটের ভরসা বর্ষার মরসুমের আমনের চাষ। আমরা প্রায় তিন দশক ধরে সংগঠনের তরফে জেলার খরা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি করে আসছি। সরকার বদলে গেল। কিন্তু সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হল আর কই?’’

জেলা প্রশাসনের দাবি, জেলায় চেকড্যাম হয়েছে, পুকুর, হাপাও খোঁড়া হয়েছে। উপরন্তু বৃষ্টির জল ধরে রেখে মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে আরও কিছু জমিকে সেচের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে কাজশুরু করা হয়েছে।

তাহলে আমনের মরসুমে বৃষ্টি কম হলে গেল গেল রব ওঠে কেন?

রঙ্গলালের দাবি, ‘‘চেকড্যামের জন্য জায়গা নির্বাচন করা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমন অনেক জায়গায় চেকড্যাম তৈরি করা হয়েছে, যেখানে চাষের জমি তুলনায় কম।’’ আবার জেলার প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো দাবি করছেন, ‘‘পুরুলিয়ার ভূ-প্রকৃতিগত অবস্থান এমনই যে এখানে বৃষ্টি হলেও পুরুলিয়ার মাটি সেই জল ধরে রাখতে পারে না। সে জন্য ছোট চেকড্যামে জল জমে থাকছে না। তবে কংগ্রেস সরকারের সময়ে তৈরি করা জেলার বড় জলাধারগুলিতে আজও জল জমে থাকে।’’

তবে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ মীরা বাউরির দাবি, ‘‘আমাদের সরকার জল ধরে রাখার জন্য অনেক কাজ করেছে। কিন্তু বৃষ্টি না হলে জল জমবে কোথায়? চেকড্যাম, সেচকুয়ো, নদী কোথাও জল নেই।’’

বাঁকুড়া জেলায় মুকুটমণিপুরের কংসাবতী এবং লাগোয়া দুর্গাপুরে ডিভিসি ব্যারাজ থেকে সেচের জল পাওয়া গেলেও তাতে পুরো জেলার চাহিদা মেটে না। দুর্গাপুর ব্যারাজের সেচের জল পায় বড়জোড়া, সোনামুখী, পাত্রসায়র ও ইন্দাসের কিছু এলাকা। কংসাবতী সেচ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে খাতড়া মহকুমার আটটি ব্লক, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, জয়পুর ও ওন্দা ব্লকের কিছু এলাকা। কাগজে-কলমে বাঁকুড়া ১ ব্লকের একাংশ কংসাবতী সেচ প্রকল্পের আওতায় থাকলেও বাস্তবে সেখানে সেচের জল যায় না বলে অভিযোগ।

বাঁকুড়া সদর মহকুমার ছ’টি ব্লকে বড় কোনও সেচ প্রকল্প না থাকায় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প গড়ে জল দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু বৃষ্টির ঘাটতিতে সে সব থেকে বড় একটা সুবিধা হয় না বলেই দাবি চাষিদের। অনেকর দাবি, প্রস্তাবিত গন্ধেশ্বরী-দ্বারকেশ্বর সেচ প্রকল্প তৈরি করা হলে বাঁকুড়া মহকুমার সেচের সঙ্কট মিটত। কিন্তু ওই প্রকল্পের রূপায়ণ বিশবাঁও জলে।

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদের অবশ্য দাবি, ২০১১-’১২ সালে জেলার ৩৪.৮৭ শতাংশ জমি সেচসেবিত ছিল, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে ৫৭.৩৭ শতাংশে। ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে জেলায় প্রায় ২৪ হাজার ৮১৯ হেক্টর জমি নতুন করে সেচসেবিত হয়েছে।

কিন্তু সেচের উন্নয়নের কাজ যে দু’জেলাতেই অনেকখানি বাকি। পুরুলিয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাই বরুণদেবের উপরেই ভরসা রাখতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্রই বৃষ্টি নামলে, কিছুটা চাষ হবে। না হলে এই পরিস্থিতিতে বিকল্প চাষের উপর নির্ভর করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।’’ তিনি জানান, সময়ে আমনের চাষ না করা গেলে চাষিদের তাঁরা বিকল্প আনাজ বা তৈলবীজ চাষে সহায়তা করবেন।

সেই ট্র্যাডিশন...। (শেষ)

scarcity of rain purulia Birbhum bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}