গণনা কেন্দ্রের বাইরে পড়ে ব্যালট পেপার। —নিজস্ব চিত্র।
গণনাকেন্দ্রে শৌচালয়ের কাছে, ঝোপের পাশ থেকে মিলল গোছা গোছা ব্যালট পেপার।পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি ব্লকের গণনাকেন্দ্র মুরাড্ডির এসআরবিপি হাইস্কুল চত্বরে বৃহস্পতিবার সকালের ওই ঘটনাকে ঘিরে ফের গণনায় কারচুপির অভিযোগে সুর চড়ালেন বিরোধীরা। এ দিনই নিতুড়িয়া ব্লকের গণনাকেন্দ্র বড়তোড়িয়া হাইস্কুল চত্বর থেকেও বিজেপির প্রতীকে ছাপ দেওয়া একটি ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। এই পরিস্থিতিতে গণনায় কারচুপির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি। সাঁতুড়ি ব্লকে তাঁরা পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান। প্রশাসন ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।
সাঁতুড়িতে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরের ভোটেরই ব্যালট পেপার মিলেছে। সেখানে বিরোধী বিজেপি ও সিপিএমের প্রতীকে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার যেমন রয়েছে, তেমনই কিছু বাতিল ব্যালট পেপারও মিলেছে। পিছনে আছে প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর।
সিপিএমের সাঁতুড়ি এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজেশ বাউরি ও বিজেপির সাঁতুড়ির নেতা অরূপ আচার্যর দাবি, ‘‘গণনা কেন্দ্র থেকে অন্তত পাঁচশো ব্যালট পেপার মিলেছে।’’ অরূপ জানান, কিছু ব্যালট পেপার তাঁরা উদ্ধার করে রঘুনাথপুরের বিধায়ক বিবেকানন্দর বাউরির মাধ্যমে কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন। অরূপ বলেন, ‘‘গণনায় কারচুপি নিয়ে আদালতে মামলা করবে দল। কারচুপির প্রমাণ হিসাবে গণনাকেন্দ্র থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যালট পেপার রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’
ব্যালটপেপার উদ্ধারের খবর চাউর হতেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কিছু ব্যালট পেপার নিয়ে বিজেপি ও সিপিএমের কর্মীরা ব্লক কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা সারা ব্লকেই পুনরায় ভোট করানোর দাবি তোলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্লক কার্যালয়ে যায় পুলিশ। নামানো হয় র্যাফ।
বিকেলে সাঁতুড়ি ব্লক অফিসে যান রঘুনাথপুরের এসডিও তামিল ওভিয়া এস। ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে তিনি আলোচনায় বসেন। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গণনার পরে ব্যালট পেপার পাঠানো হয় ভোটকেন্দ্রের সিলিং সেকশনে। সেখানে সিল করে ব্যালট রাখা হয় বাক্সে। পরে ব্লক প্রশাসন সেই বাক্স নিজেদের সেফ কাস্টডিতে রাখে। তাহলে কী ভাবে গণনাকেন্দ্র চত্বরে এত ব্যালট পেপার পাওয়া গেল? সাঁতুড়ির বিডিও শুভদীপ বেরা বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
নিতুড়িয়ার বড়তোড়িয়া হাইস্কুল চত্বরে একটি ব্যালট পাওয়ার খবর পেয়ে সেখানে যান বিডিও (নিতুড়িয়া) অজয়কুমার সামন্ত। অভিযোগ বিজেপির কর্মীরা তাঁকে হেনস্থা করেন। পুলিশ ও আধাসেনা লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।
পুরুলিয়ায় জেলা পরিষদের ৪৫টির মধ্যে ৪২টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। সব পঞ্চায়েত সমিতিই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিরোধীরা ধরাশায়ী। তার মধ্যে সাঁতুড়ি-সহ চারটি পঞ্চায়েত সমিতি একেবারে বিরোধী-শূণ্য। সাঁতুড়ির ছ’টি পঞ্চায়েতের সব ক’টিই জিতেছে শাসকদল। এই প্রেক্ষিতেই বিজেপি, সিপিএমের অভিযোগ গণনাকেন্দ্রে পড়ে থাকা সমস্ত ব্যালট পেপারেই স্পষ্ট ভোট পেয়েছে বিরোধীরা। কারচুপি করে তা সরিয়ে তৃণমূল জিতেছে।
অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরি বলেন, ‘‘নির্বাচন এবং গণনা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সব জায়গাতেই বিরোধীদের এজেন্টরা ছিলেন। কারচুপি হলে তাঁরা তখনই কেন বলেননি? যতটুকু শুনেছি, সাঁতুড়িতে পাওয়া ওই ব্যালট পেপার সিল করে রাখার সময়েই কিছু ত্রুটি হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy