পুরুলিয়া পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।
বর্ষার তুমুল বৃষ্টি নামার আগেই শহর জুড়ে খন্দপথ। ফুটপাতও বেদখল। তার সঙ্গী যানজট। রয়েছে রাস্তা আটকে ইমারতি সামগ্রী ফেলে রাখার প্রবণতাও। পথে চলাই দায়। কিন্তু পুরসভার কি হুঁশ আছে?
পুরুলিয়া
খোদ পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালির ওয়ার্ডে রেনি রোড জলট্যাঙ্কের মোড় থেকে খেজুরিয়াডাঙা হয়ে মাহাতোপাড়ার রাস্তা গর্তে ভরেছে। জিলা স্কুল মোড় থেকে আমডিহা হরিমন্দির, কুকস কম্পাউন্ডের রাস্তা, নীলকুঠিডাঙা গানের স্কুল মোড় থেকে নীলকুঠিডাঙা পাড়ার ভিতর পর্যন্ত, মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন মোড় থেকে ভাটবাঁধ মোড় বা ভাটবাঁধ মোড় থেকে মহিলা থানা কিংবা পোকাবাঁধপাড়া হরিমন্দির থেকে শীতলা মন্দির হয়ে গাড়িখানা মেন রোড— একাধিক রাস্তাই বেহাল।
বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দিতে আরও একাধিক রাস্তা আড়াআড়ি কেটে আর সারানো হয়নি। মাটি, পাথর বা শক্ত পিচ চাপা দেওয়া হয়। স্টেশনবাজার মোড়, চকবাজার, পোস্টঅফিস মোড়, কাপড়গলি মোড়, হাটের মোড়, বি টি সরকার রোড, জিলা স্কুল মোড়, ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন মোড়, জেলখানা মোড়, গোশালা মোড়, রাঘবপুর মোড়-সহ শহরের একাধিক রাস্তা ও মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। কারণ ফুটপাত বেদখল হয়েছে। টোটো ও অন্য যানবাহনের যত্রতত্র পার্কিংও ভোগাচ্ছে।
পুরপ্রধানের আশ্বাস, ‘‘স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বলা হয়েছে। অন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যেখানে বাজার রয়েছে, সেখানেও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে।’’
রঘুনাথপুর
শহরে নতুন বসতি হচ্ছে। কিন্তু নতুন রাস্তা হচ্ছে না। পুরনো রাস্তা সংস্কারেও নজর নেই। ২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামাপদ মাজির ক্ষোভ, ‘‘রাস্তার সমস্যা দীর্ঘদিনের।’’ রাস্তার একাংশ দখল করে থাকা ব্যবসায়ীদের সরানো শুরু হলেও কিছু এলাকায় সমস্যা মেটেনি। পুরপ্রধান তরণী বাউরির দাবি, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংস্কার হয়েছে। আরও এক কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি রাস্তার সংস্কার হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পরে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের রাস্তাগুলির আমূল সংস্কার করা হবে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) সুডায় পাঠানো হয়েছে।”
ঝালদা
এই শহরে রাস্তার হাল নিয়ে তেমন অভিযোগ না থাকলেও সঙ্কীর্ণ পথে যানজটে ভুগতে হয়। বাসস্ট্যান্ড, আনন্দবাজার, বিরসা মোড়, ঠাকুরবাড়ি মোড়, বাঁধাঘাটে যানজট লেগেই থাকে। কারণ, আলাদা বাসস্ট্যান্ড করতে পারেনি পুরসভা। রাস্তাতেই বাস দাঁড়ায়। পণ্যবাহী গাড়িও চলে। বাকি এলাকায় ফুটপাত বেদখল হয়েছে। ঝালদার উপপুরপ্রধান সুদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘শুনেছি বাসস্ট্যান্ড এবং বাইপাস তৈরির জন্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠানো আছে। তার কী অবস্থা, খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।’’
বাঁকুড়া
দীর্ঘদিনের বেহাল কিছু রাস্তা সারানো হলেও কয়েকটি নতুন করে খানাখন্দে ভরেছে। সতীঘাট থেকে মিশ্রপাড়া যাওয়ার রাস্তা এবং লোকপুরে রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়েছে। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার দু’টি রাস্তাই মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু বাজার এলাকার ফুটপাতে সম্প্রতি অভিযানের পরেও পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি। পার্কিং না থাকায় সুভাষ রোডের দু’পাশে বাইক, সাইকেল থাকছে। গাছ কেটে সদ্য ভৈরবস্থান থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত ফুটপাত তৈরি শুরু হয়েছে। সেই নির্মীয়মাণ ফুটপাতের একাংশও হকারদের দখলে গিয়েছে। পুরপ্রধানের দাবি, “যত দ্রুত সম্ভব ফুটপাত থেকে অস্থায়ী দোকান সরাতে বলা হয়েছে।’’
বিষ্ণুপুর
৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাদাকুলি মল্লেশ্বর, ঝাপড়মাঠ-সহ বেশ কিছু রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন। ঝাপড়মাঠ থেকে রক্ষাকালী মাঠ হয়ে মূল রাস্তায় যাওয়ার পথের কিছুটা এখনও কাঁচা। নালার জলও জমে। হাসপাতালের পিছনে বস্তির রাস্তাও কাঁচা। পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামী বলেন, “খারাপ রাস্তা শীঘ্রই মেরামত হবে। নতুন রাস্তার আবেদন দফতরে পাঠানো হয়েছে।’’ রসিকগঞ্জ থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে বোলতলা কিংবা চকবাজার যাওয়ার রাস্তার দু’পাশ ব্যবসায়ীদের দখলে। বাস চলে এলে হাঁটারও পথ নেই।
সোনামুখী
কিছু রাস্তা সংস্কার হলেও অধিকাংশই দীর্ঘদিন মেরামত হয়নি। জলের পাইপ বসানোর সময় খোঁড়া গর্তও ভরাট করা হয়নি। সোনামুখীর পুরপ্রধান সন্তোষ মুখোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি, ‘কিছু রাস্তার সংস্কার দরকার। তবে আলাদা তহবিল না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না।’’ রাস্তা দখল করে ব্যবসা এখানেও রয়েছে। সম্প্রতি পুরসভা ও প্রশাসন যৌথ ভাবে সোনামুখী-বর্ধমান রাস্তায় নিকাশি নালার উপর থেকে হকারদের সরিয়েছে। কিন্তু চৌমাথার হকারদের অনেকেই সরতে রাজি নয়। স্থানীয় মিলন দত্তের মতে, রাস্তা আটকে বেচাকেনা বন্ধ হলে দুর্ঘটনা কমবে। তবে পুর-প্রশাসনের দশ পা এগিয়ে বিশ পা পিছোলে চলবে না। (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy