অভিযুক্ত: আবু সেলিম।
জোর করে লক-আপে আটকে রাখা, মারধর-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে রামপুরহাটের প্রাক্তন আইসি আবু সেলিমের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি হাওড়া পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন মুরারইয়ের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ মফিদুল ইসলাম। বীরভূম পুলিশের এক কর্তা জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে গত সপ্তাহে ওই পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানা মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। একই সঙ্গে মামলা হয়েছে একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থার রামপুরহাট শাখার দুই প্রতিনিধি এবং কয়েক জন কর্মীর বিরুদ্ধে। তবে, সোমবার পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকে ধরা হয়নি।
সূত্রের দাবি, বছর তিনেক আগে রামপুরহাটের একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে ছোট ট্রাক কেনেন। মাসিক কিস্তিতে সেই টাকা শোধ করার কথা ছিল। চলতি বছরের গোড়ায় মফিদুল তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যান। ওই সময় এক মাসের মাসিক কিস্তি বাকি পড়ে। মফিদুলের আইনজীবী মানস কুমার বর্মনের দাবি, মাসিক কিস্তি বাকি পড়লে সাত দিনের নোটিস দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু, ওই সংস্থা তা করেনি। সংস্থার এক প্রতিনিধি তাঁর জনা পাঁচ-ছয়েক সঙ্গীকে নিয়ে মফিদুলের গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেন। তার পরে মফিদুলকে নোটিস পাঠানো হয়। মফিদুল ফিরে ওই সংস্থার অফিসে গেলে তাঁকে জানানো হয়েছিল, ঋণের বকেয়া থাকা সব টাকা অর্থাৎ প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা মিটিয়ে দিলেই গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে।
অভিযোগ, মফিদুল ওই টাকা জমা দিতে গেলে সংস্থাটির শাখা প্রধান এবং বাকিরা আরও টাকা দাবি করে। কিন্তু, অতিরিক্ত টাকা ছিল না মফিদুলের কাছে। অভিযোগকারী জানান, মার্চ মাসের ওই ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন তাঁর গাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই তিনি রামপুরহাট থানার তৎকালীন আইসি আবু সেলিমের কাছে যান। অভিযোগকারীর দাবি, আইসি-র আশ্বাস পেয়ে মুরারইয়ে রাস্তার পাশে থাকা তাঁর ছোট ট্রাকটি ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে খুলে তিনি থানায় নিয়ে আসেন। আইনজীবী মানসবাবুর দাবি, উভয় পক্ষের মধ্যস্থতা করা হবে জানিয়ে এ বছর এপ্রিলে মফিদুলকে ডেকে থানায় পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর মক্কেল গেলে দেখতে পান, যাঁরা ওই গাড়িটি কিনেছেন, তাঁদের চালক বসে রয়েছে সেখানে। মানসবাবুর অভিযোগ, ‘‘আইসি দাবি করেন, মফিদুল গাড়িটি চুরি করে নিয়ে এসেছেন মুরারই থেকে। তাঁকে মারধর করে লক-আপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। থানারই এক অফিসারের হস্তক্ষেপে পরে মফিদুল ছাড়া পান।’’ আইনজীবীর আরও দাবি, মক্কেলের গাড়ি উদ্ধার এবং পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু, সুরাহা না হওয়ায় মফিজুল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়, গত সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পরেও আবু সেলিমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়নি। শেষে গত ১৩ ডিসেম্বর আইনজীবীর তরফে হাইকোর্টের নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে চিঠি দেওয়া হয় পুলিশ সুপারকে। মানসবাবুর বক্তব্য, ওই চিঠি পাঠানোর পরেই ১৭ ডিসেম্বর মামলা দায়ের হয় আবু সালেম এবং ওই সংস্থার প্রধান-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে।
আবু সেলিম অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তেই সব প্রমাণিত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy