বন্ধ ফটক নগরবনের। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী।
পর্যটকদের কাছে বিষ্ণুপুরকে আরও আকর্ষক করে তুলতে বন দফতরের তরফে তৈরি হয়েছিল ‘নগরবন’। বিষ্ণুপুর লালগড় প্রকৃতি উদ্যানের পাশেই তৈরি ওই প্রকল্পের বছরখানেক আগে ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে প্রায় সমস্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও দরজা খোলেনি নগরবনের। যা নিয়ে নিরাশ বিষ্ণুপুরে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা।
শনিবার ছুটি কাটাতে বীরভূম থেকে সপরিবার বিষ্ণুপুরের লালগড়ে এসেছিলেন অশোক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “রামানন্দ কলেজে পড়ার সময়ে লালগড়ের প্রকৃতি উদ্যানে আসতাম। শুনেছিলাম নগরবন গড়ে উঠেছে লালগড়ে। কিন্তু এসে দেখছি তোরণে তালা ঝুলছে। টিকিট কাউন্টারও বন্ধ। সামনের এক চা দোকানিকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, এখনও চালুই হয়নি নগরবন। বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি জয়পুরে।”
কেন চালু করা যাচ্ছে না নগরবন? পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা রয়েছে কি? মানতে নারাজ বন দফতর। দফতর সূত্রে জানা যায়, সুদৃশ্য তোরণ, টিকিট কাউন্টার, পর্যটকদের বসার জায়গার পাশাপাশি শিশুদের জন্য দোলনা, নকল পশু-পাখিদের মূর্তি-সহ সংরক্ষিত জলাভূমি তৈরি হয়েছে। প্রিয়জনদের নামে গাছ লাগিয়ে তৈরি হয়েছে ‘স্মৃতিবন’ও। প্রায় ১০ হেক্টর জায়গা জুড়ে তৈরি প্রকল্পে রয়েছে ফলের বাগান, ভেষজ উদ্ভিদের বাগান, নক্ষত্রবনও। জলাশয়ে বোটিং চালুরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয় কুলুপুকুরের বাসিন্দা নির্মলা বাউরি, লিচু বাউরি, সন্ধ্যা বাউরিরা জানান, আগে শীতের মরসুমে এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকেরা আসতেন বনভোজন করতে। তাঁদের পানীয় জল ও শালপাতা বিক্রি করা হত। এখন সব হারিয়ে গিয়েছে। ধূ ধূ করছে নগরবন। জগন্নাথ টুডু, নাড়ু লোহার, কার্তিক লোহারের মতো স্থানীয়দেরও আক্ষেপ, “নগরবন চালু থাকলে লালগড় প্রকৃতি উদ্যানে পর্যটক আসতেন। এলাকায় দোকানপাট বসত। দু’টো রোজগার হত গরিব মানুষদের। পরিচর্চার অভাবে নগরবন পতিত জমিতে পরিণত হয়েছে।”
বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “নানা অনুষ্ঠানেই কয়েকটা মাস কেটে গিয়েছে। যাঁরা ‘নগরবন’ পরিচালনা করবেন, বনসুরক্ষা কমিটির সেই সব সদস্যদের ডেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ মেলেনি। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও তাঁদের প্রাথমিক পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে নগরবনের দ্বার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy