গ্রামে গ্রামে প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা গত দু’বছরে সার্বিক ভাবে কমেছে। তবে কয়েকটি ব্লকে সেই ‘হ্রাসের হার’ উল্লেখযোগ্য নয়। এ বার সেই ব্লকগুলিতে ঝুমুর রোগকে মাধ্যম করে মানুষকে ম্যালেরিয়া সম্পর্কে সচেতন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্মী এবং আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, চিকিৎসা পরিকাঠামোর ব্যবহারই রোগ প্রতিরোধে যথেষ্ট নয়। রোগ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের তুলনায় পরের বছরে জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। ২০১৭ সালে জেলায় ২,০২৩ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হয়েছিলেন। পরের বছর আক্রান্তের সংখ্যা কমে হয় ৪২২। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ২৯১।
জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, ‘‘২০১৮ সালে এবং চলতি বছরে জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। তবে অন্য ব্লকগুলির তুলনায় জঙ্গলমহলের কয়েকটি ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা সে ভাবে কমছে না। তাই ওই ব্লকগুলিতে ঝুমুর গানের মাধ্যমে সচেতনতা প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছি।’’ ব্লকগুলি হল বান্দোয়ান, বাঘমুণ্ডি, ঝালদা ১, ঝালদা ২, বলরামপুর এবং আড়শা। আপাতত বাঘমুণ্ডি ও বান্দোয়ান ব্লক জুড়ে ট্যাবলোয় ঝুমুর গানের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। দফতরের মহামারি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘জ্বর হলে রক্ত পরীক্ষা এবং দ্রুত স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলা হচ্ছে। ম্যালেরিয়ার লক্ষণগুলিও জানানো হচ্ছে।’’
‘ট্যাবলো’তে থাকা ঝুমুর গানের শিল্পী পবন তিওয়ারি বলেন, ‘‘পতঙ্গবাহিত রোগ ঠেকানোর জন্য নিজের লেখা ঝুমুর গেয়েছি পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায়। এ বার পুরুলিয়ায় এসেছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গ বিশারদ সংকর্ষণ রায় জানান, মশার কামড় থেকে বাঁচতে কী-কী পদক্ষেপ করতে হবে, তা বলা হচ্ছে। তিনি নিজেও ‘ট্যাবলো’য় থাকছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গ্রামে এবং স্কুলে গিয়ে প্রচারের পাশাপাশি, ম্যালেরিয়া রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে ক্যুইজের আয়োজন করছি।’’
উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারকিক বলেন, ‘‘২০১৭ সালে আক্রান্তের সংখ্যা দু’হাজারেরও বেশি ছিল। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলাম।’’ সতীনাথবাবু বলেন, ‘‘সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি, যেখানে সংক্রমণ বেশি ছিল, সেই এলাকাগুলিতে প্রায় চার লক্ষের মত মশারি বিলি করা হয়। কারণ, ওই এলাকায় অনেকেই মশারি ব্যবহার করতেন না।’’
বৃহস্পতিবার বান্দোয়ানের কুচিয়া হাইস্কুলে ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত প্রচার চালিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘কী ভাবে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি বা পতঙ্গবাহিত রোগের সংক্রমণ ঠেকানো যায়, তা ঝুমুর গান বা ক্যুইজের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বোঝানো হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, জমা জল থেকে কী ভাবে দ্রুত মশার বংশবিস্তার হয়’’ পিঙ্কি গরাই, আলোচনা মাহাতো, মিঠুন হালদারের মতো পড়ুয়ারা বলে, ‘‘পতঙ্গবাহিত রোগ সংক্রমণ ঠেকাতে কী করব, জ্বর হলে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে, তা জানতে পারলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy