একজোট: কাটমানি ফেরতের দাবি। বুধবার নানুরের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি-বিক্ষোভে এ বার ছড়াল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। নানুরে তৃণমূল পরিচালিত জুলুন্দি পঞ্চায়েতের কুরুম্বঘোষ গ্রামে।
বুধবার ওই গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূলের বুথ কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর স্বামী মনোজ রায় সহ শাসকদলের কয়েক জন নেতা-কর্মীর বাড়ির সামনে আবাস যোজনা, শৌচাগার নির্মাণ এবং ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলে। সেখানেই ওঠে ওই স্লোগান।
অভিযুক্তেরা অবশ্য কেউ-ই সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। মনোজবাবুরা সকলেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বিজেপি চক্রান্ত করে বিক্ষোভ করিয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অভিযোগ উড়িয়েছেন।
কাটমানি নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু নানুরে এ দিনই প্রথম সেই আঁচ ছড়াল। এ দিন সকালে শ’পাঁচেক গ্রামবাসী স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মহুয়া লাহা রায়ের স্বামী মনোজ রায়, বুথ কমিটির সদস্য অরুণ লোহার, শ্যামল ঠাকুর, সাধন পালের বাড়ির সামনে বিজেপির পতাকা এবং প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানও দেন তাঁরা।
সূচনা থান্দার, চাইনা থান্দার, সঞ্জয় লোহারের মতো গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘‘আমাদের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ হয়। তৃণমূলের নেতারা বলেছিলেন, তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে না দিলে অ্যাকাউন্টে পরের কিস্তির টাকা ঢুকবে না। সেই ভয়ে ব্যাঙ্ক থেকে তুলে ওদের হাতে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এর ফলে এখনও বাড়ি তৈরি কাজ শেষ করা যায়নি।’’ অনিমা লোহার, রেখা লোহারের কথায়, ‘‘১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেও ১০-১২ হাজার টাকা করে ওঁদের দিতে হয়েছে। না দিলে জবকার্ড বাতিল হয়ে যাবে বলে হুমকি মিলেছিল।’’ শৌচাগার নির্মাণেও একই ভাবে উঠেছে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ।
এ নিয়ে তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রামবাসীদের আইন নিজের হাতে তুলে নিতে প্ররোচনা দিচ্ছে। দুর্নীতি হয়ে থাকলে গ্রামবাসীরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। দুর্নীতি প্রমাণিত হলে আমরাও দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেব।’’
বিজেপির নানুর মণ্ডল কমিটির সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, ‘‘কাটমানি ফেরতের বিষয়ে গ্রামবাসীদের স্বতঃর্স্ফূত বিক্ষোভকে নৈতিক ভাবে সমর্থক করছি ঠিকই, কিন্তু কোনও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
নিজেকে বিজেপি কর্মী হিসাবে দাবি করে ওই গ্রামের বাসিন্দা রমেশ হেড়ল বলেছেন, ‘‘হিসেব করে দেখেছি সব মিলিয়ে তৃণমূল নেতারা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়েছেন। বিডিও-কে লিখিত ভাবে সেই কথা জানিয়েছি।’’
নানুরের বিডিও অরূপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির খরুণ গ্রাম পঞ্চায়েতেও দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে বিক্ষোভে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ওঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy