মালগাড়ি চলাচলকে অগ্রাধিকার দিতে যাত্রিবাহী কিছু ট্রেন বাতিল করার জল্পনা শোনা যাচ্ছিল কিছু দিন ধরেই। বুধবার ছড়ানো একটি সুপারিশপত্রে দেখা গিয়েছে, ৩১ মে পর্যন্ত ১৮ জোড়া ট্রেন বাতিল এবং আরও চার জোড়া ট্রেনের যাত্রাপথ কাটছাঁটের সুপারিশ করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন। এর পরেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। তবে ডিআরএম (আদ্রা) নবীন কুমার এ দিন বলেন, ‘‘ওই নোটে এখনও স্বাক্ষর করিনি। এ নিয়ে কিছু বলব না।’’
পণ্য পরিবহণে গত কয়েক আর্থিক বছরে ভাল লাভ করে আসছে আদ্রা ডিভিশন। ডিআরএম সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, ডিভিশনে মালগাড়ির চাপ অত্যন্ত বেড়েছে। দৈনিক গড়ে ১৮০ থেকে দু’শো মালগাড়ি চলার কথা। কিন্তু যাচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০টি করে। এর ফলে, বেশ কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন দেরিতে চলছিল। ডিআরএমের যুক্তি ছিল, যেহেতু মালগাড়ি চালিয়ে রেলের আয় হয় তাই পণ্য পরিবহণকে অগ্রাধিকার দিতেই হবে। অবশ্য তার জন্য যাত্রিবাহী ট্রেন তুলে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেই কিছু দিন আগেও দাবি করেছিলেন তিনি।
১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ দেওয়া একটি চিঠি বুধবার ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ‘ভাইরাল’ হয়। সেখানে মালগাড়ি চলাচলে সুবিধার জন্য কিছু ট্রেন বাতিল এবং কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মালগাড়ির বাড়তি চাপের কথা। দাবি করা হয়েছে, চাণ্ডিল-আনাড়া-আসানসোল এবং আদ্রা-মেদিনীপুর শাখায় ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন কোলিয়ারি থেকে কয়লা তোলার পরে, তা মালগাড়িতে বোঝাই করা হয় আদ্রা-ভোজুডি-গোমো শাখায়। ওই শাখার একটা অংশ আবার ‘সিঙ্গল লাইন’। ফলে, অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
আর্থিক বছরের এই সময়টায় পণ্য পরিবহণের বাড়তি চাপের ফলে যাত্রিবাহী ট্রেন চালানো উত্তরোত্তর সমস্যার হয়ে উঠছে বলে দাবি করা হয়েছে চিঠিতে। সুরাহা হিসাবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত কিছু ট্রেন বাতিল ও সংক্ষিপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে হাওড়া-পুরুলিয়া লালমাটি এক্সপ্রেস, খড়্গপুর-পুরুলিয়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, ধানবাদ-টাটানগর সুবর্ণরেখা এক্সপ্রেস, শালিমার-আদ্রা রাজ্যরানি এক্সপ্রেস, শালিমার-ভোজুডি আরণ্যক এক্সপ্রেস, আসানসোল-রাঁচী মেমু, আসানসোল-বোকারো মেমু, ঝাড়গ্রাম-ধানবাদ মেমুর মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন।
রেলের একটি সূত্রের দাবি, ডিভিশনাল অপারেটিং দফতরের তরফেই ট্রেন বাতিলের এই সুপারিশ করা হয়েছে। ডিআরএমকে অনুরোধ করা হয়েছে বিষয়টি রেলের কাছে পাঠাতে। বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন আগেই ছিল। প্রাক্তন বাম সাংসদ তথা রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া ইতিমধ্যেই ডিআরএমের সঙ্গে দেখা করে এই ব্যাপারে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছেন। পুরুলিয়া স্টেশনের বাইরে কয়েক দিন আগে প্রতিবাদসভাও করেছে সিপিএম। তবে চিঠি প্রকাশ্যে আসায় পুরো ঘটনা অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মুখ খুলতে শুরু করেছে। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোও বলছেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। তারই ভিত্তিতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলব। যাত্রীরা যাতে কোনও ভাবেই সমস্যায় না পড়েন তা দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy