Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
India-China

দু’মিনিট আছে হাতে, বলেছিল দাদা

বছর দু’য়েক হয়ে গেল অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বাবা। বাবার অ্যাপেনডিক্সের অপারেশন করাতে হয়।

শকুন্তলা ওরাং
শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২০ ০৬:৫৮
Share: Save:

ছ’মাস পর পর বাড়ি ফিরত দাদা। শেষ বার সেপ্টেম্বর মাসে পুজোর সময় এসেছিল দাদা। তারপর আর বাড়ি ফিরল না।

বছর দু’য়েক হয়ে গেল অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বাবা। বাবার অ্যাপেনডিক্সের অপারেশন করাতে হয়। যেহেতু আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, তাই দাদার টাকা দিয়েই বাবার চিকিৎসা করানো হয়। তারপর থেকে বাবা আর কাজ করতে পারে না। তখন থেকেই দাদার রোজগারেই সংসার চলত।

আমার পড়াশোনা হয়েছে একমাত্র দাদার জন্য। দাদা ১০ দিন অন্তর অন্তর ফোন করে আমার পড়াশোনার খবর নিত এবং সব সময় বলত, ভালভাবে পড়াশোনা কর, তোর পড়াশোনা করার জন্য যা যা প্রয়োজন হবে আমি তোকে সবই দেব। কিন্তু মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। দাদাই আমাকে ভাল পড়াশোনা করার জন্য ঝাড়খণ্ডের রানিশ্বর কলেজে ভর্তি করে দেয়।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে দাদা একবার ফোন করে অফিসের ফোন থেকে। তখন বলে, বেশিক্ষণ কথা বলতে পারবে না। বলেছিল আমার হাতে মাত্র দু’মিনিট সময় আছে। সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। তাই আমার সঙ্গেই কথা হয়। দাদা বলে তোরা সবাই ভাল থাকিস। মা-বাবাকে বলে দিস এখন আমি আর ফোন করতে পারব না। কারণ আজ থেকে ওপরে ডিউটি আছে। আমি ওখান থেকে ফিরে তারপর আবার তোদের ফোন করবো। তোরা চিন্তা করিস না, ভাল থাকিস।

ওটাই ছিল দাদার শেষ কথা। দাদা বলেছিল ওপর থেকে ডিউটি শেষ করে ফোন করবে। কিন্তু আর কোনওদিন দাদার সেই ফোন আসবে না আমার কাছে। মঙ্গলবার বিকেলে ফোনে দাদার অফিসের নম্বার দেখার পর বেশ খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সেই ফোনে দাদার মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। নিমেষের মধ্যেই খুশি কোথায় হারিয়ে গেল। সব ওলটপালট হয়ে গেল। এ মাসেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দাদার। সেইমতো আমরা তৈরিও হচ্ছিলাম। কিন্তু একটা ফোনেই সব শেষ হয়ে গেল আমাদের জীবনের।

নিহত রাজেশ ওরাংয়ের বোন

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy