ছবি প্রতীকী।
দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অস্থির সময়েও দাঁড়ি পড়েনি শিশু নিগ্রহের ঘটনায়। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, বাল্যবিবাহ, অপহরণ, পাচার থেকে যৌন নিগ্রহ, শিশু অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার সব ক’টি সূচকই উদ্বেগজনক। ২৩ মার্চ লকডাউন শুরু হয়েছে। সেই দিন থেকে অগস্ট পর্যন্ত বীরভূমে ৩০টি যৌন নিগ্রহের ঘটনা (পক্সো) ঘটনা সামনে এসেছে বা অভিযোগ হয়েছে। জুলাই পর্যন্ত আটকানো হয়েছে ৭৮ জন নাবালিকার বিয়ে। অপহরণ, পাচারের সংখ্যা ২৮টি। অগস্টের তথ্য জুড়লে সংখ্যাটা আরও বাড়বে। অন্য বছর যখন অবস্থা স্বাভাবিক থাকে তখনকার পরিসংখ্যানের নিরিখে এই ছবিটা মোটেও আলাদা নয়।
গত কয়েক মাসে জেলা জুড়ে শিশুকন্যাদের প্রতি যৌন নির্যাতনের যে পরিসংখ্যান বা পক্সো মামলার তথ্য পাওয়া গিয়েছে গতবারও সংখ্যাটা তেমনই ছিল। ই-কোর্ট পোর্টালে পাওয়া তথ্যও সেই কথা বলছে। গত বছর অগস্ট পর্যন্ত পক্সো মামলার সংখ্যা ছিল ৩২টি। এ বারও জানুয়ারি থেকে অগস্ট পর্যন্ত পক্সো মামলা হয়েছে ৩২টি। এখন স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বন্ধ কিছু টিউশনও। কাজ হারিয়ে বা লকডাউনের জন্য এখন বাড়িতেই অধিকাংশ সময় কাটাচ্ছেন অভিভাবকেরা। তারপরও এমন ঘটনা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন জেলা শিশু সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক ও জেলা আদালতের আইনজীবীদের একটা অংশ।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান মানলে গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নারী ও শিশু পাচারের সংখ্যা সর্বাধিক। জেলা শিশু সুরক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছরের নীচে ছেলে এবং মেয়ে অপহরণের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ১২১টি (অধিকাংশই মেয়ে)। এ বার এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটা ২৮। অন্য দিকে, ট্রাফিকিং ফর ম্যারেজ ধরলে সংখ্যাটা অনেকটা বাড়বে। কেননা এই সময়ে ৭৮টি নাবালিকার বিয়ে আটাকানো গিয়েছে। সেগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিকে ওই গোত্রে ফেলা যায়।
বিভিন্ন সংস্থা, প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, অভিভাবকেরা অনেক সময় করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের নাবালিকা কন্যার বিয়ে দেওয়ার সুযোগ খুঁজেছেন। কারণ এই সময় প্রচুর নিমন্ত্রিতের বালাই নেই। খরচও কম। দু’পক্ষের গুটি কয়েক আত্মীয় পরিজনের উপস্থিতিতেই কাজ হাসিল। কারও বাড়িতে কী হচ্ছে, তা প্রতিবেশীরাও জানতে পারছেন না। সেই সুযোগে চলছে চুপিসাড়ে বিয়ে। আরও একটা অসুবিধা হল, বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়ারা বাড়িতেই। ফলে সচেতনতা প্রচারেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। লকডাউনের প্রথম দিকে ১০৯৮ এ ফোন করে জানানোর সংখ্যাও কমে গিয়েছিল।
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহ বলছেন, ‘‘পরিসংখ্যান অবশ্যই উদ্বেগের। শিশুদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা দেখে পুলিশ, শিশু সুরক্ষা বিভাগ, শিশু কল্যাণ বিভাগ, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের প্রিন্সিপ্যাল ম্যাজিস্ট্রেট, ডিএলএসএ, চাইল্ড লাইন সহ বেশ কয়েকটি দফতর। তবে করোনা বলে কেউ হাত গুটিয়ে বসে নেই। সেই জন্য অপরাধ ঘটলেও সেটা সামনে এসেছে। এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করা গিয়েছে। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy