সঙ্গী নিয়ে বড়জোড়ার জঙ্গলে লম্বু হাতি। ছবি: বন দফতরের সৌজন্যে।
উচ্চতায় সে রামলালের থেকে অনেকটাই বড়। তবু সঙ্গীরা পাশে না দাঁড়ানোয় দলপতির হওয়ার লড়াইয়ে রামলালের কাছে পরাজিত হয়ে রাতারাতি বড়জোড়ার জঙ্গল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল সে। কয়েক মাস পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে কাটিয়ে রামলালহীন বড়জোড়ার জঙ্গলে সম্প্রতি ফিরে এসেছে সেই ‘লম্বু হাতি’। বন দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার দল পাকিয়ে দলপতি হওয়ার লড়াইয়ের প্রস্তুতি সারছে সেই দাঁতাল।
ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) উমর ইমাম বলেন, ‘‘লম্বু হাতিটি সাধারণ হাতির তুলনায় বেশি উঁচু। প্রায় ১১ ফুট উঁচু। সেখানে রামলালের উচ্চতা প্রায় ১০ ফুট। কিন্তু গত নভেম্বরে বড়জোড়ার জঙ্গলে দলের হাতিরা পাশে না থাকায় দলপতি হতে পারেনি লম্বু। এ বার প্রথম থেকেই তিন থেকে চারটি দাঁতাল হাতি সঙ্গে নিয়ে সে ঘুরছে। ধারণা করা যায়, ভবিষ্যতের কথা ভেবেই দল পাকানোর কাজ করছে সে। আপাতত তার উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে।’’
লম্বু হাতি এলাকায় ‘রেসিডেন্সিয়াল’ বা স্থানীয় হাতি বলে পরিচিত। তবে গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে রামলাল নামে একটু মারকুটে হাতি বিরাট দল নিয়ে বড়জোড়ার জঙ্গলে ঠাঁই নেয়। তখনই বিরোধ বাধে লম্বু হাতি ও রামলালের মধ্যে। গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রামলালের সঙ্গে দলপতি হওয়ার লড়াই হয় লম্বু হাতির। উচ্চতায় বেশি হলেও সে দিন দলের সমর্থন ছিল রামলালের দিকে। তাই বেগতিক বুঝে রাতারাতি বড়জোড়া থেকে মেদিনীপুরের জঙ্গলে চলে যায় লম্বু হাতি।
দলবল নিয়ে মাস দুই আগে ফিরে গিয়েছে রামলাল। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও উমর ইমাম জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগেই একা আবার মেদিনীপুর থেকে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার জঙ্গলে ফিরেছে লম্বু হাতিটি। তবে এমনটা নয় যে রামলালের দলবল ফিরে যেতেই বড়জোড়ায় পালিয়ে এসেছে সে। এ বার ফিরেই সে দল পাকাতে শুরু করেছে। তাদের নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে উৎপাত শুরু করছে।
বনকর্মীদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, এ বার লম্বু হাতিটি আক্রমণাত্মক হয়ে আছে। কিছু দিন আগে হাতিটির সামনে পড়েছিলেন বড়জোড়ার লালবাজার গ্রামের পুষ্পেন্দু সরকার। তিনি বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছি। হঠাৎ দেখি, বাড়ির উঠোনে হাতিটি দাঁড়িয়ে। ওর সঙ্গে আরও তিনটি হাতি ছিল। কোনও রকমে লুকিয়ে দৌড়ে বাড়ি ঢুকে পড়ি।’’
ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বর নাগাদ হাতির দু’টি দল ফের বাঁকুড়ায় আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে রামলাল দলপতি হয়ে এলে এ বার হয়তো কঠিন লড়াইয়ের সামনে পড়তে হতে পারে তাকে। লম্বু হাতির গতিবিধি ও ব্যবহারের উপরে নজর রাখছেন বনকর্মী ও আধিকারিকেরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy