অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির ভিতরে পাহারা। রবিবার বোলপুরের নিচুপট্টিতে। নিজস্ব চিত্র।
ঠিক দু’বছর আগে ১১ অগস্ট বোলপুর শহরের নিচুপট্টি এলাকার নীল রঙের বাড়ি থেকে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। আসানসোলের জেল হয়ে এখন তিহাড়ে বন্দি অনুব্রত। পরে একই মামলায় ইডি গ্রেফতার করে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও। সম্প্রতি সিবিআইয়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। যদিও গরু পাচার নিয়ে ইডির করা মামলায় এখনও বন্দি তিনি। সিবিআইয়ের মামলায় তাঁর জামিনে খুশি হয়েছে তৃণমূল। যদিও এর পরেও জেলার রাজনীতিতে অনুব্রত এখনও কতটা প্রাসঙ্গিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও তা স্বীকার করতে চায়নি তৃণমূল। তবে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।
অনুব্রত জেলবন্দি হওয়ার পরেই তাঁকে নানা ভাবে জেলা রাজনীতে থেকে ‘মুছে’ ফেলতে চাইছে দলের একাংশ— এমন অভিযোগ অনুব্রত ‘ঘনিষ্ঠ’ কয়েক জনের। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার তাঁর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে অন্য কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে জেলা তৃণমূলের পরিচালনার ভার কোর কমিটির হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। এর পরে অনুব্রতের অনুপস্থিতিতেই পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে জেলায় ‘ব্যাপক’ জয় পেয়েছে তৃণমূল। প্রকাশ্যে না বললেও এই জয় অনুব্রতকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ করে তুলেছে বলে মনে করছে দলের একাংশ।
যদিও ‘অনুব্রত-অনুগামী’দের দাবি, তাঁর দেখানো ‘পথেই’ জয় পেয়েছে শাসকদল। ফলে, এখনও তিনি ‘প্রাসঙ্গিক’। তাঁদের কথায়, “গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত তিনি জেলার শেষ কথা ছিলেন। তিনি ফিরে এলে আবারও তিনি জেলার শেষ কথা হবেন।” বিশেষ করে সিবিআইয়ের গরু পাচার মামলায় অনুব্রতের জামিনের পরে আশাবাদী তাঁরা। তাঁদের আশা, কিছু দিনের মধ্যে ইডির মামলাতেও জামিনে মুক্ত হয়ে জেলায় ফিরবেন তিনি।
অনুব্রতের অনুপস্থিতি জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন অনুব্রত ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত এক সময়ে জেলা রাজনীতিতে ‘ব্রাত্য’ কাজল শেখ। প্রথমে কোর কমিটির সদস্য, পরে ভোটে জিতে তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি। এখন দলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যানার, পোস্টারে অনুব্রতের উপস্থিতিও কমেছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। সম্প্রতি নানুরের ‘শহিদ’ দিবসের আগে দলীয় কার্যালয় থেকে তাঁর ছবি লাগানো বোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়। যদিও জানাজানি হতেই পড়ে ‘তড়িঘড়ি’ নতুন বোর্ড লাগানো হয়। কিন্তু অনুব্রত ফিরে এলে কাজলের ‘কর্তৃত্ব’ খর্ব হবে কি না, এ নিয়ে জল্পনা রয়েছে দলের মধ্যে। যদিও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তবে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “দলের কুকীর্তি ফাঁস হয়ে যাবে। তাই তাঁকে এখনও দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়নি। উনি যে সব দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাতে তিহাড় থেকে এই মুহূর্তে বেরোনো তার পক্ষে কঠিন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “ওঁকে তৃণমূল ব্যবহার করেছে। আগামীদিনে ব্যবহৃত হবেন কি না সেটা ওঁর ব্যাপার। ”
পাল্টা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’বছর আগেও তিনি রাজনীতিতে যতটা প্রাসঙ্গিক ছিলেন, আজও ঠিক ততটাই প্রাসঙ্গিক। ইডি এবং সিবিআই— বিজেপির দুই সংস্থা গত দু’বছর ধরে তদন্ত করছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁরা তেমন প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি। আশা করছি, উনি দ্রুত জামিনে মুক্তি পাবেন এবং আবার বীরভূমে স্বমহিমায় প্রকাশিত হবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy