বস্তা ভর্তি বাজি উদ্ধার। বৃহস্পতিবার নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ৮ জনের মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসেছে বীরভূম জেলা প্রশাসনও। জেলার কোথাও যাতে এগরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য বিভিন্ন বাজি কারখানার লাইসেন্স খতিয়ে দেখছে জেলা পুলিশ। বেআইনি বাজি কোথাও তৈরি হলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার একাধিক এলাকায় অভিযান চালায় জেলা পুলিশ।
তার মধ্যে বড় অভিযান হয় লাভপুরের পূর্ণা গ্রামে। পুলিশ-প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ণা গ্রামে বেআইনি বাজি তৈরির কারখানা চলছিল বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। লাভপুর থানার পুলিশ এ দিন অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বাজি কারখানার সন্ধান পেয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশের দাবি, ওই সব কারখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ বাজি, প্রায় এক কুইন্টাল মশলা সহ বাজি তৈরির উপকরণ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ণা গ্রামটি বাজিকরদের গ্রাম হিসাবেই পরিচিত। গ্রামের ১০-১২ টি পরিবার বিয়ে, পুজো সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বরাত অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বাজি তৈরি করে আসছে। দোকানে দোকানেও বাজি সরবরাহ করা হয়। এর আগে গ্রামে ছোটখাটো বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। তবু, বাজি তৈরি করা বন্ধ হয়নি। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, সব জেনেও পুলিশ-প্রশাসন এ বিষয়ে বিশেষ গা করেনি কখনও।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বাজি তৈরির জন্য ওই পরিবারগুলির কারও কার ও এক সময় সরকারি লাইসেন্স থাকলেও এখন আর কেউ নবীকরণ করাননি। বাজিকরদের দাবি, লকডাউনের সময় বাজার মন্দা পড়ে যাওয়ায় আর নবীকরণ করা যায়নি। পুলিশেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু পূর্ণা নয়, নানুরের রামকৃষ্ণপুর, মোহনপুর এবং লাভপুরের কুরুম্বা সহ বিভিন্ন গ্রামে বাজি তৈরির চল রয়েছে। ২০০৪ সালে অষ্টমী পুজোর দিন বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে কুরুম্বা গ্রামের বিশ্বনাথ মালাকার এবং তাঁর সহকারী শিবদাস বাগদির মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, পূর্ণা গ্রামে অভিযান চালিয়ে চার জনকে আটক করা হয়েছে। অন্য গ্রামেও ধারাবাহিক অভিযান চলবে।
পূর্ণার পাশাপাশি এ দিন নলহাটি থানার পুলিশও বিভিন্ন দোকানে ও এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণ নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে। এক বাজি বিক্রেতাকে আটকও করা হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের মতে, এগরায় অবৈধ বাজি কারখানায় যা ঘটেছে, তার পরে পুলিশের লাগাতার অভিযান চালানো দরকার। বেআইনি বাজি তৈরির কারবারি ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলে বিক্রি অনেকটাই কমবে।
এ দিন সিউড়ির থানা এলাকার খটঙ্গা অঞ্চলের এক বাজি ব্যবসায়ীকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। ওই বাজি ব্যবসায়ী তথা প্রস্তুতকারকের দাবি ছিল, তিনি লাইসেন্স নিয়েই বাজি তৈরি করেন। কিন্তু তিনি পুলিশকে যে লাইসেন্স দেখান, তা বেশ কিছু বছর পুরনো হওয়ায় তাঁকে লাইসেন্স নবীকরণের আগে বাজি তৈরি না-করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, লাইসেন্স নবীকরণ না করে ওই ব্যক্তি আবারও বাজি তৈরি করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy