গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
চলন্ত বাসে ছুরি চালিয়ে স্ত্রীর প্রেমিককে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন স্ত্রীও। মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ বাঁকুড়ার কেরনিবাঁধ এলাকায় একটি যাত্রিবাহী বাসে এই ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের চিৎকারে বাসচালক বাস থামান। সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত বাস থেকে নেমে অন্ধকারে গা ঢাকা দেন বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, ছুরির আঘাতে জখম স্ত্রী এবং তাঁর প্রেমিককে ভর্তি করানো হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বছর ছয় আগে মালদহের হবিবপুরের বাসিন্দা নমিতার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার অলকাধড়া গ্রামের যুবক সৌরভ সিংহ বাবুর। পরে দু’জনে বিয়েও করেন। বছর তিনেক আগে তাঁদের এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। গত ২৭ জানুয়ারি কন্যাসন্তানকে নিয়ে অলকাধড়া গ্রাম থেকে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান নমিতা। ওই যুবতীর শাশুড়ি সিমলাপাল থানায় পুত্রবধূ এবং নাতনিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন। অপহরণের অভিযোগ করেন বীরভূমের বাসিন্দা শেখ ঔরঙ্গজেব নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।
ওই মামলার সূত্রে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন নমিতা এবং ঔরঙ্গজেব। আদালতের কাজ সেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া থেকে দুর্গাপুরগামী বেসরকারী বাসে ওঠেন নমিতা। সঙ্গে ছিলেন ঔরঙ্গজেব এবং নমিতার সন্তান। অভিযোগ, নমিতাকে অনুসরণ করে বাঁকুড়ার কেরানিবাঁধ মোড়ে ওই বাসে উঠে পড়েন সৌরভ। বাস চলতে শুরু করলেই তিনি ছুরি নিয়ে হামলা চালান ঔরঙ্গজেবের উপর। তাঁর গলার কাছে ছুরির কোপ মারতেই স্বামীকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন নমিতা। তখন ছুরির কোপ লাগে নমিতার শরীরেও। ঘটনায় হতচকিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন বাসের অন্যান্য যাত্রী। সঙ্গে সঙ্গে বাসচালক বাস থামিয়ে দেন। তখনই বাস থেকে নেমে দৌড় দেন সৌরভ। এর পর বাসচালক বাস ঘুরিয়ে সোজা বাঁকুড়া সদর থানার দিকে রওনা দেন। তবে খবর পেয়ে রাস্তায় পৌঁছে যায় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। ওই বাসেই আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন জখম দু’জন। বাসচালক রঞ্জিত মাহাতো বলেন, ‘‘আমি বাস চালাচ্ছিলাম। তাই বাসের ভেতরে কী হয়েছে তা দেখতে পাইনি। যাত্রীদের চিৎকার শুনে বাস ঘুরিয়ে থানার দিকে যাচ্ছিলাম। সেই সময় পুলিশ বাসের কাছে পৌঁছে আমাকে বাস-সহ সোজা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসে।’’
অন্য দিকে, অভিযুক্ত সৌরভের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে অপহরণ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে খাতড়া মহকুমা আদালতে তোলে। কিন্তু, আদালতে মহিলা জানান, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। এর পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ওই মহিলার প্রেমিকের উপর চলন্ত বাসে ছুরি নিয়ে হামলা চালান তাঁর স্বামী। ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের পরিবারের তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মূল অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy