সচেতনতা প্রচার অযোধ্যা পাহাড়ের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
অযোধ্যা পাহাড়ে শিকার উৎসবের আগে হাতি নিয়ে মানুষজনকে সতর্ক করল বন দফতর। সেন্দ্রা পরব উদ্যাপনের জন্য শুধু রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত নয়, ভিন্ রাজ্য থেকেও মানুষজন পুরুলিয়ার এই পাহাড়ে জড়ো হন। আজ, রবিবার সন্ধ্যা থেকে এই উৎসব পালন শুরু হবে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ে এই মুহূর্তে ২৫টি হাতি তিনটি দলে ভাগ হয়ে অবস্থান করছে। কয়েক দিন আগে এ রকমই একটি দলছুট দাঁতালের আক্রমণে এক মহিলার মৃত্যু হয় জয়পুরের ঝালমামড়া গ্রামে। বিয়েবাড়ি উপলক্ষে ওই গ্রামে আসা মহিলাকে ভোরে রাস্তায় সামনে পেয়ে আছাড় মারে হাতিটি। এই দলছুট দাঁতালও এখন পাহাড়েই রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বন দফতরের পুরুলিয়া ডিভিশনের আধিকারিক (ডিএফও) দেবাশিস শর্মা জানান, পাহাড়ের তিনটি প্রান্তে হাতিদের তিনটি দল অবস্থান করছে। পাশাপাশি, তিনটি দলছুট দাঁতালও পাহাড়ে রয়েছে। সেন্দ্রা পরব উদ্যাপনের জন্য এ সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাহাড়ে মানুষজন জড়ো হন। বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে তাঁরা পাহাড়ে ওঠেন। সে কারণেই বন দফতর হাতিদের অবস্থান নিয়ে প্রচার শুরু করেছে। এডিএফও অভিষেক চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাতে হাতিদের তিনটি দল পাহাড়ের কুচড়িরাখা, পাকুড়পানি ও খামারের দিকে অবস্থান করছিল।
হাতি নিয়ে সতর্ক করা ছাড়াও, সেন্দ্রা পরবে যোগ দিয়ে বন্যপ্রাণ হত্যা না করার জন্যও মানুষজনের কাছে আবেদন রাখছে বন দফতর। ডিএফও বলেন, ‘‘অযোধ্যা পাহাড় জীববৈচিত্র্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত সম্পদশালী। পাহাড়ে প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন শুধু রাজ্য নয়, ভিন্ রাজ্য থেকেও মানুষজন সেন্দ্রা পরবের জন্য মিলিত হন। এই পরবের সময়ে কিছু মানুষ নির্বিচারে বন্যপ্রাণ হত্যা করেন। আমাদের আবেদন, অহিংসার প্রচারক বুদ্ধের জন্মদিন অন্যতম পবিত্র দিন। পাহাড়ে উৎসবে যোগ দিন, কিন্তু কোনও ভাবেই বন্যপ্রাণ হত্যা নয়।’’ তিনি জানান, দেশের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন (১৯৭২) অনুযায়ী, বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখি শিকার সম্পূর্ণ বেআইনি। কেউ বন্যপ্রাণ নিধনে লিপ্ত হলে, তা দণ্ডনীয় হবে।
বনকর্তাদের অনেকের দাবি, পাহাড়ের বেশ কিছু মানুষজনই এই উৎসবের অনেক আগে থেকে বন্যপ্রাণ হত্যার বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছেন। ডিএফও জানান, অযোধ্যা রেঞ্জ-সহ পাহাড়কে ঘিরে বাঘমুণ্ডি, আড়শা, ঝালদা, কোটশিলা, বলরামপুর রেঞ্জের প্রতিটি এলাকা থেকে অন্তত ১৪-১৫টি যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যেরা এই প্রচারে নেমেছেন।
যেহেতু রবিবার সকাল থেকেই মানুষজন পাহাড়ে ওঠা শুরু করবেন, সে কথা মাথায় রেখে প্রতিটি রাস্তায় বনকর্মীদের পাশাপাশি, পুলিশকর্মী এবং যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যেরা নাকা-তল্লাশিতে থাকবেন। শিকারের অস্ত্র-সহ পাহাড়ে ওঠার ছাড়পত্র মিলবে না বলে বন দফতর জানিয়েছে। এডিএফও জানান, পাহাড়ে ওঠার রাস্তায় বিভিন্ন গ্রামে দেওয়াল লিখনও করেছেন মানুষজন। সেখানেও বন্যপ্রাণ হত্যা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy