প্রতিবাদী: বিজেপির মানববন্ধন কর্মসূচি। বুধবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করার অভিযোগে প্রতিবাদে জেলা জুড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করল বিজেপি।
বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে ওই কর্মসূচি পালিত হয়। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা চলে। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। সিউড়ি-সহ জেলার ৪০টি মণ্ডলীতে ওই কর্মসূচি পালন করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারব না। কোনও মিটিং-মিছিল করতে পারব না। আমাদের কর্মীরা কোনও কর্মসূচি করলেই তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ ওঁদের গ্রেফতার করে হেনস্থা করছে৷ তারই প্রতিবাদে এই মানববন্ধন কর্মসূচি।’’
জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে এ দিন সকালে মানববন্ধন কর্মসূচির পরে বিকেলে বিজেপির মহিলা মোর্চার উদ্যোগে জেলার তিনটি মহকুমায় মোমবাতি মিছিল করা হয়।
বিজেপি নেতারা জানান, গত তিন মাসে জেলায় সাত জন রাজনৈতিক কর্মীকে খুন হতে হয়েছে। ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে ওই মোমবাতি মিছিল হয়। শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘নিহত সাত জনের মধ্যে তিন জন তাদের দলের কর্মী বলে দাবি করেছেন তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। বাকিরা বিজেপি কর্মী। কিন্তু দলবল নির্বিশেষে সমস্ত খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে মোমবাতি মিছিল করা হয়েছে।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর পরে জেলা বিজেপি এ ভাবেই তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করল। জেলা বিজেপির অনেক কর্মী ও নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্য যুবমোর্চার সাধারণ সম্পাদক ধ্রুব সাহা, জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সংখ্যালঘু মোর্চা সম্পাদক শেখ সামাদ। জেলা ও রাজ্য স্তরের অনেক নেতা-কর্মী জেলবন্দি থাকলেও কেন এখনও জেলা বিজেপির তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, তা নিয়েও আড়ালে প্রশ্ন উঠছিল। দলের একাংশের বক্তব্য, সে সবের পরিপ্রেক্ষিতেই এমন কর্মসূচি নেওয়া হল। বিজেপি সূত্রে খবর, দিনদু’য়েক আগে সিউড়ি রবীন্দ্রসদনে দলের বিজয়া সম্মেলনীতে আগামী চার মাস দলের কী কর্মসূচি থাকবে তা বিস্তারিত ভাবে ঘোষণা করেছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে ১৫ নভেম্বর থেকে জেলার প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় বুথকর্মী সম্মেলনের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ।
বিজেপির অন্দরমহলের খবর, এমন পরিস্থিতিতে জেলা বিজেপির তরফে কোনও কর্মসূচি শুরু না করলে রাজনৈতিক লড়াইয়ে শাসক দলের থেকে পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। তা মনে রেখেই বুধবার থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করল বিজেপি।
বিজেপির জেলা স্তরের নেতাদের একাংশের দাবি, জেলার অনেক থানাতেই দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নানুর, পাড়ুই ও লাভপুর থানায় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে এমন ঘটনা বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই ওই থানাগুলিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের দাবি নিয়ে বোলপুরের এসডিপিও-র কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
বিজেপির অন্দরমহলের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে জনসংযোগ বৃদ্ধিতে শাসক দল ও পুলিশের অত্যাচারের অভিযোগকে সামনে এনে ময়দানে নামতেই এমন পদক্ষেপ করার ভাবনা। এ দিন বিজেপির মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয় মহম্মদবাজার ব্লকের শালদহ মোড়ে, বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে। বুধবার ওই কর্মসূচিতে ছিলেন জেলাস্তরের নেতা অভিজিৎ ঘোষ, ব্লকের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ ভাণ্ডারি ও তারাপদ দাস। অভিজিৎবাবু অভিযোগ করেন, পুলিশ এলাকার বিজেপি কর্মীদের বেছে বেছে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং গ্রেফতার করছে। দলের জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ধ্রুব সাহাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার ও পুলিশ যে ভাবে অত্যাচার করছে তাতে এলাকার মানুষ বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। এখন মানববন্ধনের মাধ্যমে অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এতে কাজ না হলে পরে গোটা জেলাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।’’ রামপুরহাট শহরেও কামারপট্টি মোড় থেকে পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত দলের কর্মীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy